লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে কংগ্রেস – তৃণমূল জোটের সম্ভাবনা গত সপ্তাহেই খারিজ করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই সম্ভাবনায় জল ঢাললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ২টো আসেনর দয়ার দান চাই না। বরং বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতায় তিনি বেশি আগ্রহী বলে স্পষ্ট করেছেন অধীর।
এদিন অধীরবাবু বলেন, প্রথম দিন থেকেই বলে আসছে ২টোর বেশি আসন দেব না। ২টোর দয়া কে নেবে? আমরা কেউ দয়া চেয়েছি? আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি।
মমতাকে অধীরের চ্যালেঞ্জ, ‘বহরমপুরে হারাবে বলছে, মালদায় হারাবে বলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করছি। যে কাউকে এখানে পাঠিয়ে দিন। যদি হারাতে পারেন, রাজনীতি করা ছেড়ে দেব। আপনি নিজে আসুন, দেখি কত ক্ষমতা আপনার'।
বলে রাখি, গত সপ্তাহে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় দলীয় সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে তৃণমূল। আর সারা দেশে লড়বে ইন্ডিয়া। তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটে কংগ্রেস তৃণমূলের জোট সম্ভাবনা সুদূর পরাহত।
সূত্রের খবর, গত মাসে দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পর রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই বৈঠকে এক সুরে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করেন কংগ্রেস নেতারা। তারা জানান, রাজ্যে কংগ্রেসের দুরবস্থার প্রধান কারণ তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা ভাবে কংগ্রেস ভাঙিয়েই মমতা শক্তিশালী হয়েছেন। এমনকী সাম্প্রতিককালে বায়রন বিশ্বাস পর্বও শীর্ষ নেতৃত্বকে জানান তাঁরা।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসের আসন সমঝোতার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। ইতিমধ্যে কংগ্রেসকে জোট বার্তা দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম। পুরনো বন্ধুর হাত ছেড়ে অধীরবাবুরা কম আসনের বিনিময়ে তৃণমূলের হাত ধরবেন এই সম্ভাবনা কম। তাছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের হাতে আক্রন্ত হচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। তৃণমূলের সঙ্গে জোট করলে তৃণমূল স্তরে দলীয় কর্মীদের মধ্যে দলের বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে ঠেকবে। যার ফলে রাজ্যে আরও দুর্বল হবে কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের মতে, রাজ্যে জোট করার ইচ্ছাই ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কংগ্রেসের ওপর জোট চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। রাজ্যে কংগ্রেসের ২টি লোকসভা আসন রয়েছে বটে কিন্তু উত্তরবঙ্গে অধিকাংশ জায়গায় তৃণমূলের থেকে কংগ্রেস শক্তিশালী। ফলে সেখানে জোটের সমীকরণ তৈরির অধিকার থাকা উচিত ছিল কংগ্রেসের।