‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’—মান্না দে’র গলায় এই গান শুনে আজও অনেকে নস্টালজিক হয়ে পড়েন। এই গান যখন তিনি গেযেছিলেন তখন পাড়ায়–পাড়ায়, অলিগলিতে কফি শপ খোলেনি। আর এই গানে কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসকেই তুলে ধরা হয়েছিল। যা আজও বাঙালির কাছে অদ্বিতীয়। কফি হাউস, বইপাড়া—এটার একটা আলাদা আভিজাত্য আছে। তাছাড়া একটা ইতিহাস রয়েছে। এখানে এসেছেন অনেক নামকরা ব্যক্তিত্বই। সত্যজিৎ রায় থেকে অমর্ত্য সেন কেউ বাদ যাননি। এবার সেই কফি হাউসেরই আর একটি ঠিকানা হতে চলেছে নিউ দিঘা। সমুদ্রসৈকতে বসে কফির তুফান তোলা যাবে।
কেমন হচ্ছে সেই কফি হাউস? আড়াই হাজার স্কোয়ার ফিট জায়গা নিয়ে গড়ে উঠছে ইন্ডিয়ান কফি হাউস। আধুনিক ধাঁচে তৈরি হচ্ছে ১২০টি আসন। তবে এটা সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এই কফি হাউসে পাওয়া যাবে বলতে যে মেনু এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, সেগুলি হল— ফিশ ফিঙ্গার, মটন কবিরাজি, চাইনিজ, তন্দুর, মকটেল–সহ আরও অনেক কিছু। মান্না দে’র প্রিয় পকোড়া এবং ব্ল্যাক কফি তো থাকছেই। আড্ডার সঙ্গে মান্না দে’র গানের শোনাও যাবে। দার্জিলিংয়ে এমন একটা হয়েছে। এবার দিঘার সমুদ্রসৈকতে ঢেউ নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে দেখতে কফি হাউসের কফির কাপে চুমুক দেবেন পর্যটকরা।
পর্যটকদের আকর্ষণ কেমন সাজছে দিঘা? দুর্গাপুজোর সময় দিঘার অমরাবতী বিনোদন পার্ক এবং কাজলাদিঘি লেক পার্কে সেজে উঠছে। অমরাবতী পার্ককে ঢেলে সাজাচ্ছে দিঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা। নারায়ণ দেবনাথের কার্টুন মডেল ঠাঁই পেয়েছে এই পার্কে। এখানে জলাশয়ের উপর নতুন কাঠের সেতু গড়ে তোলা হয়েছে। তার জন্য ১০ লক্ষ টাকা খরচ করছে দিঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা। আর কাজলাদিঘি লেক পার্কে টয় ট্রেন ও বোটিং পরিষেবা থাকছে। হাঁদা–ভোঁদা, বাহাদুর বেড়াল, বাঁটুল দি গ্রেট, নন্টে–ফন্টে এবং নানা বিষয় রাখা হয়েছে শিশু মনে হিল্লোল তোলার জন্য। পার্কের ভিতর বিশাল জলাশয়ে রাজহাঁসের দল খেলা করে। ছোট আকারের রোপওয়ে জলাশয়ের উপর দিয়ে গিয়েছে। ‘ক্যাফেটেরিয়া’ নামক রেস্তোরাঁ আবার চালু করার চিন্তভাবনা চলছে।
আরও পড়ুন: মাত্র দু’ঘণ্টায় ১৫ হাজার গাড়ি মা উড়ালপুল দিয়ে গেল, চোখ কপালে ট্রাফিক পুলিশের
আর কী জানা যাচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ যখন দিঘা সফরে আসেন তখন কফি হাউস তৈরির প্রস্তাব অনুমোদন করেন। মহাষষ্ঠীর দিন দিঘার এই কফি হাউসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। দুর্গাপুজোর সময় দিঘার কফি হাউসে বসবে লোকসঙ্গীতের আসর। আর সাবাই মেতে উঠবে কফি হাউসের আড্ডার আসরে। উদ্বোধনের দিনই পর্যটকদের জন্য ২০ শতাংশ ছাড় রাখা হচ্ছে। সুতরাং একদিকে পার্ক অন্যদিকে কফি হাউস, মাঝে সমুদ্রসৈকত।