অবৈধভাবে তৈরি হয়েছিল ইটভাটা। আর সেই ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া এবং ধুলোয় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী জমির ধান চাষ। এমনই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে করা একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেই ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিলেন জেলা শাসক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক বকুলতলা থানার মায়াহাউরি গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত ওই অবৈধ ইটভাটাকে অবিলম্বে বন্ধ করতে বলেছেন।
GST বৃদ্ধি সহ কেন্দ্রীয় একাধিক নীতির প্রতিবাদে দেশজুড়ে ইটভাটা বন্ধের ডাক
মামলার বয়ান অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় সোনা ব্রিকফিল্ড নামে একটি ইটভাটা চালাচ্ছিলেন বাচ্চু রায় নামে এক ব্যক্তি। ইটভাটার পার্শ্ববর্তী জমির চাষীদের অভিযোগ ছিল, এই ইটভাটা চালানোর জন্য যে বৈধ অনুমোদন প্রয়োজন তা তার কাছে ছিল না। বহু ধান চাষের জমির একেবারে গায়েই অবস্থিত রয়েছে এই ইটভাটাটি। চাষীদের আরও অভিযোগ, ইটভাটা থেকে ইট তোলা বা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধানের জমির ওপর দিয়ে। শুধু তাই নয় ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া এবং ধুলো পার্শ্ববর্তী জমিতে পড়ার ফলে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যার ফলে ফলন কমে যাচ্ছে ধানের। এরপরেই প্রতিকার চেয়ে ধনঞ্জয় মোদক নামে এক চাষী-সহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় বিডিও থেকে শুরু করে বিএলআরও, এসডিও এমনকি জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ জানান। তারপরে কোনও সুরাহা না মেলায় একাধিক সরকারি দফতরে অভিযোগ জানান শেষ পর্যন্ত প্রতিকার না পেয়ে তারা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তাদের হয়ে মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী ইন্দ্রজিৎরায় চৌধুরী।
আইনজীবী জানান, করোনা পর্বের ঠিক আগে এই জনস্বার্থ কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণনের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার পরিপেক্ষিতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা শাসকের কাছে ইটভাটার বৈধতা আছে কি না তা জানতে চেয়েছিল। তাতে জেলা শাসক ডিভিশন বেঞ্চকে জানিয়েছিলেন ওই ইটভাটার জন্য কৃষি এবং পরিবেশ দফতরের কোনও ছাড়পত্র ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জেলা শাসককে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল হাইকোর্ট। এরপরে বেশ কয়েকটি শুনানি করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক। তারপরেই অবিলম্বে ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ইটভাটাটি যাতে পুনরায় চালু করতে না পারে সে বিষয়ে বিডিওকে নজরদারি চালাতে বলেছেন।