দত্তপুকুর বিস্ফোরণে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। মাঝরাতে হাসপাতালে মৃত্যু হল ঘটনার অভিযুক্ত সামসুর আলির। আবার সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে উদ্ধার হল একটি কাটা মুণ্ড ও কাটা হাত। পুকুরেও মিলেছে মুণ্ডহীণ দেহ। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮। তবে এখনও সবাইকে শনাক্ত করা যায়নি। এখনও পর্যন্ত বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তদন্তকারীরা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের অভিঘাতেই আজ উদ্ধার হওয়া দেহটি থেকে মাথা ছিটকে গিয়ে পড়েছে।
এদিকে রবিবার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বারাসত লাগোয়া দত্তপুকুর থানার নীলগঞ্জ ফাঁড়ির নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মোচপোল পশ্চিমপাড়া অঞ্চল। ধূলোয় মিশে যায় একটি দোতলা বাড়ি। এই বিস্ফোরণের তীব্রতায় ১০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেরামত এবং সামসুল দু’জনে মিলে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করত। বিস্ফোরণে কেরামত, সামসুল দুজনেই মারা গিয়েছে। কেরামতের ছেলের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। রাতে মৃত্যু হল সামসুলের। এই ঘটনায় একজন গ্রেফতার হয়েছে। যার নাম শফিক আলি। সোমবার মোচপোল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, হলুদ ফিতে দিয়ে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও আতঙ্ক কাটছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের।
অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকায় ওই বেআইনি বাজি কারখানাটি অনেকদিন ধরেই চলছিল। এইদুর্ঘটনার সময় কারখানাতে অনেক শ্রমিক কাজ করছিলেন। কারখানার ভিতরে ছিল শিশু ও মহিলারা। এখনও অনেকের দেহ ধ্বংসস্তুপের নীচে আটকে রয়েছে।গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে আছে। বোমা তৈরির রাজও হত কারখানায়। শুধু বাজি মজুত ছিল না কারখানায়। ধ্বংসাবশেষ ঘেঁটে বেশ কিছু নমুনা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অ্যালুমিনিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় কিছু বাজি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতো। নমুনা সব ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রবিবার রাতেই রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই একজন গ্রেফতার হয়েছে। আসেন তিনি এই ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।
আরও পড়ুন: দত্তপুকুর কাণ্ডে জোড়া মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে, সিবিআই এনআইএ দাবি বিজেপির
আর পুলিশ সূত্রে খবর, কেরামত আলির ‘বাজি’র ব্যবসায় ‘অংশীদারিত্ব’ ছিল শফিকের। বাজি কারখানার বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন কেরামতও। বেআইনি বাজিই তৈরি হতো এই কারখানায়। শ্রমিকদের কোনও প্রশিক্ষণ ছিল না বলেই রাসায়নিক কাঁচামাল থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। অবৈধ ‘বাজি’ কারখানায় বিস্ফোরণ হতেই লাশের পাহান দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় সামসুল হকের জমি ভাড়া নিয়েই এই বাজির ব্যবসা ফেঁদেছিলেন কেরামত আলি। সামসুলের বাড়ি লাগোয়া জমিতে দিনের বেলায় চলত বাজি তৈরি। আর দু’টি ঘরে চলত প্যাকেজিংয়ের কাজ।