উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে সংঘাতেই জড়িয়েছেন রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপাল। এই আবহে বিগত দিনে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন সিভি আনন্দ বোস। সেই উপাচার্যদের বেতন ও ভাতা এখন বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে বেজায় চটেছেন রাজ্যপাল। তাই এবার অস্থায়ী উপাচার্যদের ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। তারপর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবেন তিনি বলে সূত্রের খবর। উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আগে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তবে পরে সুর–তাল কেটে যায়। কারণ রাজ্যের পরামর্শ না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল।
কবে ডাকা হয়েছে বৈঠকে? এদিকে এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের বেতন–ভাতা বন্ধের নির্দেশ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারদের কাছে পৌঁছে যায়। এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, এই অস্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগ বেআইনি। তাই তাঁরা বেতন–ভাতা পাবেন না। তাই আগামী ২৮ জুন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। কারণ আগামীকাল সোমবার রাজ্যপাল সস্ত্রীক উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন। তাই সেখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য তিনি খবর দিয়েছেন উপাচার্যদের।এই উপাচার্যদের নিয়োগ অস্বীকার করে রেজিস্ট্রারদের রাজ্য সরকার কড়া নির্দেশ দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পতাকার চাহিদায় এগিয়ে গেল তৃণমূল, লড়ছে বাম–বিজেপি
আর কী জানা যাচ্ছে? অন্যদিকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্য সরকার একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। কলকাতা হাইকোর্টে সেই অর্ডিন্যান্সকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়। সম্প্রতি ওই মামলার শুনানিতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য এবং মামলাকারীর বক্তব্য জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী অর্ডিন্যান্স নিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার মধ্যেই রাজভবনের বাইরে এই অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়ে রাজ্যপালের বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উপাচার্য নিয়োগের অর্ডিন্যান্সকে চ্যালেঞ্জ, রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
রাজ্যপাল কি কঠোর পদক্ষেপ করবেন? এই উপাচার্যদের বেতন–ভাতা–অন্য কোনও আর্থিক সুবিধা বন্ধ হওয়ায় বেজায় চটেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পদাধিকার অনুযায়ী, তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। সেখানে তাঁর নিযুক্ত উপাচার্যদের বেতন বন্ধ হওয়ায় তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এই প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রারদের পাল্টা রাজ্যপাল নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁরা যেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে এই অধ্যাপকরা যাতে অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ না দেন, তার জন্য স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই আবেদন করেছিলেন তাঁদের। কিন্তু সেই আবেদন অগ্রাহ্য করেই ওই অধ্যাপকরা দায়িত্ব নেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।