পর্যাপ্ত জোগান পেলে তিন মাসের মধ্যে বাংলায় সবাই করোনাভাইরাস টিকা পেয়ে যাবেন। বৃহস্পতিবার এমনই আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, নরেন্দ্র মোদীর ফর্মুলা মেনে চললে দেশে টিকাকরণের জন্য ১০ বছর লাগবে।
বৃহস্পতিবার মোদীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পর মমতা জানান, কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এক সেকেন্ডও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। অথচ টিকার জোগানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দাবি-দাওয়া জানাবেন বলে ঠিক করেছিলেন। সেই ‘সুযোগ না পাওয়ায়’ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভ উগরে জানান, কেন্দ্রের থেকে পর্যাপ্ত টিকা মিলছে না। তার ফলে বাংলায় সকলের টিকাকরণ প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে। মমতা বলেন, ‘ভ্যাকসিন পেলে আমি পুরো তিন মাসের মধ্যে সবাইকে দিয়ে দেব। কিন্তু ভারত সরকার যদি না দেয়, তাহলে আমাদের হাতে খালি হাতে নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে।’
পরিসংখ্যান তুলে ধরে মমতা দাবি করেন, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রথমসারির যোদ্ধাদের জন্য ১.৩১ কোটি ডোজ দিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যে ১.২৬ কোটি ডোজ ইতিমধ্যে প্রদান করা হয়ে গিয়েছে। ১৮ থেকে ৪৪ বছরের মানুষদের টিকাকরণের জন্য ১৭.৫ লাখ ডোজ হাতে এসেছে। মমতা জানান, কেন্দ্রের থেকে তিন কোটি ডোজ চেয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে দু'কোটি ডোজ থাকত রাজ্য সরকারের হাতে। এক কোটি ডোজ বেসরকারি হাসপাতালের হাতে তুলে দিতেন। এখন অবশ্য ৮.৬ কোটি ডোজ প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
তারইমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের করোনাভাইরাস টিকা প্রদানের আর্জি জানিয়ে মোদীকে চিঠি মমতা। মমতা জানান, জরুরি পরিষেবা চালু রাখার জন্য রেল এবং বিমানবন্দরের কর্মীরা অনবরত কাজ করে যাচ্ছেন। একইরকমভাবে ব্যাঙ্ক, বিমান, ডাকঘর, প্রতিরক্ষা, কয়লা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে কর্মীরাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তাই 'কোনওরকম বিলম্ব না করে এবং বয়সের কোনও সীমা না রেখে তাঁদের টিকা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।' অথচ কেন্দ্রের নীতিতে তাঁদের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে না বলে আক্ষেপ করেছেন মমতা।
চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, ময়দানে নেমে যাঁরা কাজ করছেন এবং যাঁরা ভোটের কাজে যুক্ত ছিলেন, সেরকম কর্মীদের একটি বড় অংশকেই বাংলায় টিকা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু টিকার অভাবের কারণে সবাইকে টিকা দেওয়া যাচ্ছে না। সকলকে টিকা দেওয়ার জন্য কমপক্ষে ২০ লাখ ডোজ লাগবে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের জন্য টিকার বন্দোবস্ত করার বিষয়টি অগ্রাধিকারের সঙ্গে বিবেচনা করার আর্জি জানান মমতা। সঙ্গে চিঠিতে লেখেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কোনওরকম বিলম্ব ছাড়া অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারি এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য টিকার বন্দোবস্ত করার আর্জি জানাচ্ছি আমি।’