প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিজেপির অন্দরে ঝামেলা চললেও কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে রাজবাড়ির বধূকে প্রার্থী করেছে। বিপরীতে হেভিওয়েট প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র। সুতরাং কৃষ্ণনগর এখন নজরকাড়া কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। শুরু হয়েছে জোরদার প্রচার। যদিও রাজবাড়ির বধূ তথা রানিমা আবেগ এখন ততটা খাচ্ছে না কৃষ্ণনগরের মানুষজন বলেই খবর। বুধবার বিজেপিতে যোগদান করেন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির বধূ অমৃতা রায়। শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে বিজেপির পতাকা তলে যান তিনি। এরপরই দেখা গেল, অমৃতা রায়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়েই সরব হয়েছে নেটিজেনরা।
সোশ্যাল মিডিয়া ছবি ছড়িয়ে পড়েছে অমৃতা রায়ের হাতে বিজেপি পতাকা নিয়ে। এই আবহে নীলাঞ্জন দাস নামের এক ব্যক্তি এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন। তাঁর এক্স হ্যান্ডেলের বায়ো বলছে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার চক্রান্তকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র রায়। মীরজাফরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। রবার্ট ক্লাইভের সঙ্গে কৃষ্ণচন্দ্রের যোগসাজশ ছিল। তার ফলে পলাশির যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় হয়। যেটা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের পথকে প্রশস্ত করে।’ এই লেখাই এখান রাজ্য–রাজনীতিতে চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই লেখা থেকে স্পষ্ট, নীলাঞ্জন দাস লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সরাসরি আঘাত হেনেছেন রাজবাড়িতে। আর তাতেই জোরদার ঝামেলা শুরু হয়েছে। নীলাঞ্জন আরও লেখেন, ‘সিরাজউদ্দৌলার হত্যার পর মীরজাফর বাংলার নবাব হন। এরপর ওই জায়গা নেন মীর কাশিম। তিনি কৃষ্ণচন্দ্রকে বন্দি করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ব্রিটিশরা কৃষ্ণচন্দ্রকে আনুগত্যের জন্য মুক্ত করে মহারাজা উপাধি দেয়।’ এই লেখা নিয়েই এখন সরগরম কৃষ্ণনগর। এই বিষয়ে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, ‘নীলাঞ্জন দাসকে জানি না। তবে রাজবাড়ি সম্পর্কে যাঁরা কুৎসা করছেন সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কৃষ্ণনগরের রাজবধূকে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতিতে ওয়েলকাম করছে।’
আরও পড়ুন: কলকাতা থেকে বড় দফতর সরিয়ে নিতে চাইছে এসবিআই, কর্মীরা চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে
তবে এসবের মধ্যে একটা তথ্য উঠে এসেছে। এখন সেটাকেই ঢাল করছেন অনেকে। এই নিয়ে বিশিষ্ট লেখক স্বদেশ রায়ের বক্তব্য, ব্রিটিশদের সঙ্গে কৃষ্ণচন্দ্রের একটা সখ্যতা ছিল সেটা পুরোপুরি অস্বীকার করার জায়গা নেই। রানি ভবানী তখন ওই সখ্যতার বিরোধীতা করেছিলেন। এমনকী কৃষ্ণচন্দ্র যে ব্রিটিশদের সঙ্গে সখ্যতা করেছিলেন সেটার প্রমাণ বহন করছে লর্ড ক্লাইভের উপহার দেওয়া কামান।’ যদিও নদিয়া উত্তরের বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের কথায়, ‘এটা তৃণমূল কংগ্রেসের তৈরি করা ইতিহাস। তৃণমূলের কিছু চুনোপুঁটি নেতারা যাঁরা ইতিহাস জানেন না তাঁরাই এই সমস্ত গল্প বানাচ্ছেন।’