আবার রাজ্যের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। মহালয়ার ঠিক আগের দিন দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর, পুরুলিয়া, রানাঘাটের পর এবার সোনারপুরের এক সোনার দোকানে ভরসন্ধ্যায় তাণ্ডব চালাল ডাকাতের দল। রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গয়না লুঠপাট করে চম্পট দিল তারা। মোটরবাইকে করে এসে ডাকাতরা দোকানে ঢুকে পড়ে। তারপর আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লুঠপাট করে। এমনকী পালানোর সময় শূন্যে গুলি ছুড়ে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করে তারা। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিকে সোনারপুরের বারেন্দ্রপাড়ার সোনার দোকানে ডাকাতি হতেই তুমুল চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনা ঘটাতে দু’টি মোটরবাইকে করে মোট চারজন দুষ্কৃতী সেখানে আসে। তারা দোকানের ভিতর ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকায়। তারপর প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে লুঠপাট চালায়। আর চম্পট দেওয়ার সময় মোটরবাইকে করে শূন্যে গুলি ছোঁড়া হয়। তাদের পাকড়াও করে গিয়ে তখন পিছিয়ে আসতে হয় এলাকার অটো চালকদের। এই ঘটনার আগেও সোনারপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল।
কেমন করে গোটা অপারেশন হল? প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, প্রথমে তারা সাধারণ ক্রেতা হয়ে ভিতরে ঢুকেছিল। ক্রেতার ছদ্মবেশ ধরেই সোনার দোকানে প্রবেশ। আর দোকানে ঢুকেই ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর মাথায় বন্দুক ঠেকানো হয়। শুরু হয় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি। তখন ভয়ে ভিতরে ঠকঠক করে কাঁপছেন দোকানিরা এবং অন্যান্য ক্রেতারা। আর একসপ্তাহও বাকি নেই দুর্গাপুজোর। তার মধ্যেই বন্দুক মাথায় ঠেকিয়ে লুঠপাট শুরু করে দুষ্কৃতীরা। হাতের সামনে যা পেয়েছে তাই ব্যাগে ভরেছে। তারপর দোকান ছাড়ে তারা।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই সোনার দোকানে ডাকাতি করার আগে রেইকি করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ কোন সময় লোকজন কম থাকে, আর কেমন করে এই ডাকাতি করতে হবে সেটা আগাম পরিকল্পনা ছাড়া সম্ভব নয়। সোআর দোকানের মালিক সজল পাড়ুই এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি মোটরবাইকে আসে দুষ্কৃতীরা। চারজন দোকানের ভিতরে ঢোকে। আর লকারের চাবি চেয়ে বন্দুক ঠেকায়। মারধর করা হয়। এমনকী বচসা শুরু হলে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তার পর দোকান থেকে সবকিছু লুঠপাট করে।’
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় এবার পর্যটকদের জন্য থাকছে প্রমোদতরী, দিঘার সমুদ্রে বিশেষ আকর্ষণ
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, এই ডাকাতির ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যায় পুলিশ। স্থানীয়দের ও দোকানিদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কারা জড়িত তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও আজ রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। এই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর মালিক সজল বলেন, ‘দোকানের ভিতরে ঢুকে আমাকে লক্ষ করে গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু গুলি চলেনি। তার পর বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। গয়নার পাশাপাশি দু’লক্ষ টাকা নগদ ছিল। সবই নিয়ে গিয়েছে। আমাদের চিৎকারে বাইরের অটো চালকরা ডাকাতদের আটকাতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়।’