পাহাড়ের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাই এবার রক্তের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, শুক্রবার কার্শিয়াংয়ের সভা থেকে পাহাড়বাসীর এবং নিজের দায়িত্ব ভাগ করে নিলেন। একইসঙ্গে দিলেন বিরাট প্রতিশ্রুতি। যা শুনে করতালি দিয়ে মানুষজন সহমত পোষণ করলেন। এই সভা থেকেই তাঁর প্রতিশ্রুতি, কাজের জন্য আপনাদের আর বাইরে যেতে হবে না। সারা পৃথিবী এবার আপনাদের কাছে আসবে। সেটা কেমন করে? সভামঞ্চ থেকে তা বাতলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে পাহাড়বাসীকে একটি দায়িত্ব দিলেন। আর পাল্টা নিজেও দায়িত্ব নিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা হতে শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আপনারা পাহাড়কে শান্ত রাখার দায়িত্ব নিন। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, পাহাড়ের উন্নয়নের দায়িত্ব আমার।’ সুতরাং এই কথার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব বন্টন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি এবং গুরং বাহিনী পাহাড়কে অশান্ত করে রাখে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী কারও নাম নেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘কিছু লোক পাঁচ বছর অন্তর একবার করে জেগে ওঠে। আর পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা করে। অশান্তি হলে শিল্পপতিরা বিনিয়োগ করবে কেন? তাই আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি, পাহাড়কে শান্ত রাখার দায়িত্ব আপনারা নিন, উন্নয়নের দায়িত্ব আমার।’
বিজেপি উত্তরবঙ্গকে পৃথক করতে চেয়েছিল। তাছাড়া এখানে কোনও কাজ করেনি বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার। তাই আজ নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটের সময় অনেকে এসে অনেক লোভ দেখায়। অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। কিন্তু কিছুই করে না। আমাদের রক্তে আছে, প্রতিজ্ঞা কীভাবে রক্ষা করতে হয়, আমরা সেটা জানি। কার্শিয়াংয়ে আইটি হাব তৈরি করা হবে। দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, কার্শিয়াংকে ঘিরে একাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপন করা হবে। বহু শিল্প সংস্থা রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।’
আরও পড়ুন: ‘এখানের শিক্ষক শূন্যপদ আমরা পূরণ করব’, কার্শিয়াংয়ের সভা থেকে ঘোষণা মমতার
অন্যদিকে এখানে শিক্ষক নিয়োগ থেকে পাট্টা বিলি, পাকা বাড়ি–সহ নানা কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের ৩ লক্ষ চা শ্রমিককে পাকা বাড়ি তৈরি করে দেবে রাজ্য সরকার। যাঁরা বাড়ি চাইবেন বাড়ি, যাঁরা পাট্টা চাইবেন তাঁদের আমরা পাট্টা দেব। দার্জিলিংয়ের ৩ লাখ ৩২ হাজার ঘরে পানীয় জলের লাইন পৌঁছে দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত ৮৩ হাজার বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে। কালিম্পংয়ে টার্গেট ৬৫ হাজার বাড়ি। আর পৌঁছেছে ২২ হাজার ঘরে। মনে রাখবেন দিল্লি নয়, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ আমরা নিজেদের টাকায় করেছি। এখানের স্কুলে শিক্ষক সমস্যা রয়েছে। শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্থানীয়রাই অগ্রাধিকার পাবেন।’