তাঁর সঙ্গে পাহাড়ের রক্তের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাই পাহাড়ের যাবতীয় কাজ করার দায়িত্ব তাঁর। সমস্যার সমাধান তিনিই করবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ, শুক্রবার একাধিক প্রকল্পের সূচনা এবং শিলান্যাস করে এই কথাই জানান। একইসঙ্গে এখানে শিক্ষক নিয়োগ করার ঘোষণা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ের সঙ্গে এখন তাঁর রক্তের সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে বলেই আজ তিনি কল্পতরু হলেন এখানের সভায়। তাই পাহাড়কে আরও অনেক কিছু দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। একের পর এক ঘোষণায় বুঝিয়ে দিলেন পাহাড়ের পাশেই আছেন তিনি।
এদিন যখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক ঘোষণা করছেন তখন পাহাড়ের মাটি কেঁপে উঠছিল মানুষের করতালিতে। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার ৫৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। ৩৩ হাজার মানুষ এই সরকারি পরিষেবা পাবেন। তিস্তায় যে দুর্যোগ হয়েছে তাতে ৫৫০টির বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তাদের সাহায্য করেছি। আমার রক্তের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে পাহাড়ের সঙ্গে। জিটিএ–কে তাই আরও ৭৫ কোটি টাকা দিচ্ছি। জিটিএ’র কর্মচারিদের আমরা অবসরকালীন সবরকম সুবিধা দিচ্ছি। যাঁরা অবসর নেবেন ২০ লক্ষ টাকা করে গ্র্যাচুইটি পাবেন। ১০ মাসের লিভ এনক্যাশমেন্ট পাবেন। যে রেগুলার কর্মচারি আছেন ২০০৯ ও ২০১৯ সালের পে কমিশন অনুযায়ী তাঁদের বেতন পরিবর্তন হবে।’
এদিকে আজ পাট্টা দেন মুখ্যমন্ত্রী। চা–শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে অভাব আগেই জেনে নিয়েছিলেন। এবার সেই অভাব পূরণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘এখানে পাট্টা দেওয়া বন্ধ ছিল। আমাদের সময়ে তা দিয়েছি। চা বাগানেও পাট্টা দেওয়ার জন্য সমীক্ষা করেছি। নামের তালিকা তৈরি হচ্ছে। গতকাল খুব বৃষ্টি হয়েছে। ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষক ভাই–বোনরা ভয় পাবেন না। রাজ্য সরকার সহযোগিতা করবে।’ এই ঘোষণা শোনার পর খুশিতে ভেসে যান পাহাড়ের মানুষজন।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় স্বস্তি পেলেন না অভিষেক, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল সুপ্রিম কোর্টে
অন্যদিকে আজ একটা ভিতরের কথা জানিয়ে দেন পাহাড়বাসীকে। মুখ্যমন্ত্রী এখানে শিক্ষক নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘উত্তরবঙ্গে শিল্পের উন্নতির জন্য মুখ্যসচিব বৈঠক করেছেন। ২৪ হাজার কোটির বিনিয়োগ উত্তরবঙ্গে হচ্ছে। আইটি সেক্টর হচ্ছে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে। অনিত থাপা, শান্তা ছেত্রী আমার সঙ্গে ঝগড়া করছে। দিদি দাও দাও করছে। আমি বলেছি, দেবো। আমার পরিবারের সঙ্গে বিয়েও হয়েছে পাহাড়ের মেয়ের। আমাদের রক্তের সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। এখানে বহুদিন ধরে বন্ধ থাকা রিজিওনাল স্কুল সার্ভিস কমিশন অফ হিলস চালু করতে চলেছি। ২০০৩ থেকে বন্ধ ছিল। পাহাড়ে ১৪৬ আপার প্রাইমারি সেকেন্ডারি স্কুলে যে ৫৯০টি শিক্ষক শূন্যপদ আছে আমরা তা পূরণ করব। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে অ্যাডহক কমিটি ফর ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড তৈরি হবে। ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডেও ১ হাজার শূন্যপদ আছে। তাও পূরণ হবে। চা–সুন্দরী প্রকল্পে ৩ লক্ষ শ্রমিককে পাকা বাড়ি করে দিচ্ছি।’