কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েছেন শিশির অধিকারীর পুত্র সৌমেন্দু অধিকারী। ছেলে সৌমেন্দুর সঙ্গেই ডিএম অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। আর সেখানেই পুলিশের বাধার মুখে পড়লেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারী।
তমলুকের নিমতৌড়িতে জেলাশাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন সৌমেন্দু। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিশির অধিকারীও। মিছিল করে তাঁরা ডিএম অফিসের দিকে যান। কিন্তু জেলাশাসকের অফিসের গেটের দিকে যাওয়ার সময়ই সেই মিছিল আটকায় পুলিশ। সেই সময় শিশির অধিকারীও মিছিলের সামনেই ছিলেন। তাকেও পুলিশ আটকে দেয় বলে দাবি করছে বিজেপি। এরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
এনিয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সৌমেন্দু। তিনি বলেন, নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ এমন দলদাস পুলিশকে ধিক্কার জানাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে এরা আজ শিশিরবাবুর মতো প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও তিনবারের সাংসদকে হেনস্থা করার দুঃসাহস দেখাল।
এদিকে সৌমেন্দুর প্রচারে গিয়ে শিশির অধিকারী ইদানিং একের পর এক তোপ দাগছেন তৃণমূলকে নিশানা করে। বুধবার সৌমেন্দু অধিকারীর সমর্থনে কাঁথির রামনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। সেখানেই বক্তব্য রাখার সময় তৃণমূল কংগ্রেসকে একের পর এক আক্রমণ করেন শিশির। সেখানেই শিশির অধিকারী বলেন, ‘তৃণমূল চোর, ডাকাতে ভরে গিয়েছে। এটা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভোট নয়। এটা দেশ গড়ার ভোট। এত দুর্নীতি, জালিয়াতি আমি অন্য কোনও রাজ্যে দেখিনি। আমি জানি না আমার থেকে বয়স্ক লোক পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আছে কি না। তৃণমূলে যোগ দেওয়া আমার মস্ত বড় ভুল ছিল। তাই আমি আপনাদের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সে দিনের ভুলের জন্য আজ বাংলাকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। এটা না করলে আজ বাংলার যুবকদের এই দুর্দশা হতো না।’
কাঁথির বিদায়ী সাংসদ। শিশির অধিকারী। ছেলে শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই গেরুয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। এমনকী বিগত দিনে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও দেখা গিয়েছিল। সেই শিশির অধিকারী ইদানিং বলছেন তাঁর অতীতে তৃণমূলে যাওয়াটা ভুল ছিল। তবে সৌমেন্দু এবার এই আসনে দাঁড়ালেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবারও পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক আসনে আসলে লড়ছেন শুভেন্দু। শেষ পর্যন্ত সেই মর্যাদার লড়াইতে শিশির-শুভেন্দু কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন সেটাই এখন দেখার।