শিলিগুড়িতে একটি বেআইনি নির্মাণের মামলায় পুরসভার ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই বেআইনি নির্মাণে পুর কমিশনার এবং অন্যান্য আধিকারিকদের ভূমিকা খতিয়ে দেখার জন্য সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিলেন। একইসঙ্গে পুরসভার রেকর্ড রুম সিল করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিচারপতি গাঙ্গুলির নির্দেশে স্থাগিতাদেশ, লিলুয়ায় বন্ধ বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ
শিলিগুড়ি সেবক রোডে ওই নির্মাণ ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। এর আগে মামলাটি উঠেছিল জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। সেইসময় ওই নির্মাণের নকশা দেখতে চেয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিচারপতির কাছে তা পাঠানো হয়নি। তাতেই শিলিগুড়ি পুরসভার আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। কী কারণে এই নকশা আদালতে পেশ করা হচ্ছে না, তা জানতে চেয়েই সিআইডি তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের আশঙ্কা ওই বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের হাত রয়েছে। এক্ষেত্রে দুর্নীতি দেখতে পাচ্ছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাই সিআইডি তদন্তের পাশাপাশি যাতে রেকর্ড রুম থেকে নথিপত্র কেউ সরাতে না পারে, তার জন্য সেটি সিল করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, শিলিগুড়ির ওই বেসরকারি ভবনের ট্রাস্টের সদস্যদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তারপরেই মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ উঠেছে, আগে ট্রাস্টের যিনি সভাপতি ছিলেন, তিনি অবৈধভাবে এই ভবনটি নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও, ফায়ার লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। এসবের ভিত্তিতেই ট্রাস্টের বর্তমান সদস্যরা মামলা করেছিলেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এর আগে মামলার শুনানি হয়েছিল গত ১১ ডিসেম্বর। এরপরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পুরসভার কাছে ভবনের নকশা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই নকশা আদালতে জমা দেওয়া হয়নি। পরে বিচারপতি ফের পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়াকে বুধবারের মধ্যে নকশা জমা দিতে বলেছিলেন। তাতেও নির্দেশ মানা হয়নি।
এরপর ফের ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যেও নকশা জমা পড়েনি হাইকোর্টে। পুরসভার তরফে জানানো হয়, এটি ১০ বছরের পুরনো তাই নকশা খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। পরের দিন বিচারপতি শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের পুরনো ও নতুন রশিদ আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাও দেওয়া হয়নি। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি। একইসঙ্গে ১৯৮৯ সালের পর থেকে কতগুলি বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করা হয়েছে? তার সমস্ত তথ্য জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।