আদালতের নির্দেশ মানেনি পুলিশ। আর তাই আজ, শুক্রবার কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, আদালত অবমাননার জেরে তাঁর বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হবে না? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে উত্তর জানতে চাইলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এমনকী পরবর্তী শুনানির সময়ে ভার্চুয়ালি হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতার নগরপালকে। একটি মোবাইল চুরির মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট পুলিশ কমিশনারকে কিছু নির্দেশ দিয়েছিল। যা মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালত অবমাননার ওই অভিযোগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
এদিকে মামলা করেছেন পঙ্কজ কুমার দুগার। তাঁর মোবাইল চুরি গিয়েছিল। আর তা নিয়েই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। ২০২২ সালের ওই মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু কলকাতার পুলিশ কমিশনার নিজে ওই রিপোর্ট না দেওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। মামলাকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছিল, ১৮ জুন, ২০২২ তারিখে ওই ব্যক্তির মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন কোথায় ছিল সেটা জানাতে হবে মোবাইল সংস্থাকে। কিন্তু এত কিছুর পর কোনও কাজই হয়নি বলে অভিযোগ জমা দেওয়া হয় আদালতে। তার প্রেক্ষিতেই আজ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রশ্ন তোলেন, ‘আদালতের নির্দেশ কি খেলার জিনিস?’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনায় রাজ্যজুড়ে শুরু পুজো, দেব থেকে কর্মীরা মন্দিরে
অন্যদিকে যেদিন মোবাইল চুরি হয়েছিল সেদিন ওই ব্যক্তি কালীঘাট থানা এলাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। তাই আলিপুর পুলিশ কোর্ট থেকে হাজরা মোড় ও কালীঘাট দমকল স্টেশন পর্যন্ত এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আদালত পুলিশ কমিশনারকে এই সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেয়। এমনকী ওই মোবাইল সংস্থা থেকে তথ্য জোগাড় করে সেসব আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ না হওয়ায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘কলকাতা হাইকোর্টের অর্ডার না মানলেও চলবে? পুলিশ কি এমনই মনে করছে? ভুলে যাবেন না, হাইকোর্টের ক্ষমতা।’ পরবর্তী শুনানিতে পুলিশ কমিশনারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
এছাড়া পুলিশ কমিশনারের হয়ে কালীঘাট থানার ওসি কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট দেয়। এতেই বেজায় চটেছেন বিচারপতি। আদালত সূত্রে খবর, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও সেই মতো কাজ হয়নি। আর যা হয়েছে তা দেখে আজ বেজায় চটে যান বিচারপতি। পুলিশের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘ভুলে যাবেন না, হাইকোর্টের ক্ষমতা। কেন আদালত অবমাননার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেব না?’ আগামী ২২ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। ওইদিন পুলিশ কমিশনারকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তবে ভার্চুয়ালি।