বেসরকারি স্কুলে লাগামছাড়া ফি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এবার এই সমস্ত বিষয়ে রাজ্যকে গাইডলাইন তৈরির পরামর্শ দিলেন বিচারপতি। সোমবার মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলায় বিচারপতির একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। কত ফি বাড়ানো হবে? কখন ফি বাড়ানো হবে? সে সমস্ত বিষয়ে কেনও রাজ্যের নজরদারি নেই? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এরপরই তিনি গাইডলাইন তৈরি করার পরামর্শ দেন। বিচারপতির মতে, এ নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকলে কোনও সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন: বেসরকারি স্কুলে টিউশন ফি–তে ২০ শতাংশ ছাড়, নন অ্যাকাডেমিক ফি নিতে বারণ হাইকোর্টের
প্রসঙ্গত, প্রাইভেট স্কুল নিয়ে সমস্যা প্রকট হয়েছিল ২০২০ সালে কোভিডের পর থেকে। লকডাউনের জেরে প্রায় সমস্ত মানুষই আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সেই মুহূর্তে বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল কোনওভাবেই ফি কমাতে রাজি হয়নি। তাই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। সে সংক্রান্ত মামলায় স্কুলের ফি বৃদ্ধির পাশাপাশি স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও টিউশন ফি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন মামলাকারীরা। সোমবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু মামলার শুনানিতে অন্যান্য রাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘একাধিক রাজ্যে ফি সংক্রান্ত নিজস্ব আইন আছে।’ তবে এ রাজ্যে সেই ধরনের কোনও নীতি আছে কিনা? ফি স্ট্রাকচার খতিয়ে দেখার জন্য কোনও গভর্নিং বডি আছে কিনা? তা জানতে চাওয়ার পাশাপাশি এ নিয়ে কোনও গাইডলাইন নেই কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি মনে করেন বেসরকারি স্কুলের পছন্দ হোক বা না হোক গাইডলাইন থাকলে সে ক্ষেত্রে ফি নিয়ে সমস্যা হবে না। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘রাজস্থানে এই সংক্রান্ত নীতি থাকলে এ রাজ্যে কেন থাকতে পারবে না।’ অন্যদিকে, আইনজীবী জানান, রাজ্যে এমন ধরনের কোনও গাইডলাইন নেই। একই সঙ্গে সরকারি স্কুলগুলিতে যেমন অযোগ্য শিক্ষকরা বাদ পড়েছে বেসরকারি স্কুলগুলির ক্ষেত্রেও সেরকমই চান বিচারপতি। উল্লেখ্য,
কখনও বেশি হারে ফি নেওয়া আবার কখনও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রায়ই বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তবে নির্দিষ্ট কোনও কমিশন না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ নিয়ে অভিভাবকদের ছুটতে হয় আদালতে। সেই সমস্যার সমাধানে রেগুলেটরি কমিশন গঠন করার কথা আগেই জানিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলেই এই কমিশনে অভিযোগ জানানো যাবে। এই কমিশনের নাম দেওয়া হতে পারে ‘প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন।’ দ্রুতই এই কমিশন চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে।