মুর্শিদাবাদের সুতির গোথা হাই স্কুলে বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগের মামলায় সিআইডির ডিআইজিকে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। তদন্তে অসন্তুষ্ট হওয়ায় এর আগেই ডিআইজিকে তলব করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি। শেষে আজ বুধবার মামলার শুনানিতে ডিআইজিকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন আদালতে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেয় সিআইডি। কিন্তু সেই রিপোর্ট দেখে সন্তুষ্ট হননি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাই তিনি ডিআইজিকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানিতে ডিআইজিকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, SSC-র কাছে রিপোর্ট চাইল CID
মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস সামিম জানিয়েছেন, সিআইডির তদন্তে সন্তুষ্ট না হওয়ায় ডিআইজিকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সিআইডি এই মামলার তদন্তে নেমে রাজ্য জুড়ে ৩৬ জন শিক্ষকের নাম পেয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষক ভুয়ো নথি ব্যবহার করে চাকরি পেয়েছেন এবং ১১ জন শিক্ষকের কোনও নথি খুঁজে পায়নি সিআইডি। তদন্তে জানা গিয়েছে, ৭ জন মেধা তালিকায় স্থান পরিবর্তন করে চাকরি পেয়েছে। প্রসঙ্গত, সোমা রায় নামে এক চাকরি প্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ওই স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক অরিন্দম মাইতির নিয়োগের মেমো নম্বর জাল করে চাকরি পেয়েছিলেন অনিমেষ তিওয়ারি। এমনকী ৩ বছর তিনি বেতনও পেয়েছেন। সেই মামলায় প্রথমে অনিমেষের বেতন বন্ধ করেন কলকাতায় হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং পরে ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেন রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিকে।
উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত এই মামলায় ৩৩ জনেরও বেশি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন ডিআই অফিসের আধিকারিক, কর্মীদের পাশাপাশি স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকা। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসহযোগিতা করেছিলেন আশিস তিওয়ারি। তাই তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যে অনেক অসঙ্গতি ছিল। সেই কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অনিমেষের নিয়োগ প্রসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তখন জানায়, ওই নামে কোনও নিয়োগের সুপারিশ করা হয়নি। বিচারপতি এই মামলায় সিআইডির তদন্ত নিয়ে বহুবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর আগে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘তদন্ত সঠিক পথে চলছে না। এই তদন্তে আমি মোটেই সন্তুষ্ট নই।’ তখন তিনি সিআইডির ডিআইজিকে ডেকে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আর এবার ডিআইজিকে হাজিরার নির্দেশ দিলেন।