একদিকে বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রাখা অন্যদিকে মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, রবিবার আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘মানুষ আশাহত হলে বিচারব্যবস্থার দ্বারস্থ হয়। কিন্তু, বর্তমানে এখন আদালত রায় দেওয়ার আগে মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে গাইড করছে। এটা হতে পারে না। মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’ তাঁর এই মন্তব্য সাম্প্রতিক কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক রায় প্রসঙ্গে বলে মনে করা হচ্ছে। যেখানে আইনজীবী থেকে বিচারপতিরা সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করছেন। এমনকী অনেক বিষয় সংবাদমাধ্যমে শুনে মন্তব্য করছেন বিচারপতিরা। যা নিয়ে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিকাল সায়েন্সেসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমাদের সম্মানই আমাদের সব। ওটাই যদি কেউ লুঠ করে নেয় তাহলে সব চলে যায়। এটা একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না। তবে গত দু’মাস ধরে বিচারব্যবস্থার সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রশংসা শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের প্রশংসা করে মমতা বলেন, ‘আমি জানি না তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য এই মঞ্চ ঠিক কিনা। তবে আমি এটা বলতে পারি নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর ললিতজি দেখিয়ে দিয়েছেন বিচারব্যবস্থাকে কী করে চালাতে হয়। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন মাত্র দু’মাস। উনি অবসর নিচ্ছেন পরের মাসেই। কিন্তু তার মধ্যেই বিচারব্যস্থার প্রতি নতুন করে মানুষের আশা ফিরেয়ে এনেছেন। আমি বলছি না মানুষ বিচারব্যবস্থার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু এখন অবস্থা খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে যাচ্ছে।’
কেন এমন মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী? নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রীতিমতো আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিচারব্যবস্থার সর্বদাই মানুষকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচানো উচিত। অন্যায়ের হাত থেকে রক্ষা করা উচিত। মানুষের কান্না শোনা উচিত। কিন্তু, এখন মানুষ দরজার আড়ালে কাঁদে। এখন আদালত রায় দেওয়ার আগে মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে গাইড করছে। এটা হতে পারে না। মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’