রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত। তার মধ্যে বেশিরভাগ আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে সরকারি হাসপাতালে। আবার বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা চলছে বহু আক্রান্তের। এই অবস্থায় হাসপাতালগুলিতে শয্যার অভাব দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘হোম কেয়ার’ পরিষেবা দিতে শুরু করেছে শহরের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল। উল্লেখ্য, করোনার সময় শয্যা অপ্রতুল থাকার কারণে একইভাবে হোম কেয়ার পরিষেবার দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছিল বহু বেসরকারি হাসপাতাল। ডেঙ্গির ক্ষেত্রেও ঠিক সেরকমটি করা হয়েছে। বাড়িতে থেকেই ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করছেন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাঁদের নজরদারিতে রোগীদের নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে, প্লেটলেট গণনা, রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়াও ফোনে অথবা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে নিয়মিত রোগীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ১ সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত ১২০০, ১০, ১১ ও ১২ বোরো নিয়ে চিন্তা
জানা গিয়েছে, শহরের ৫টি বেসরকারি হাসপাতাল ডেঙ্গি আক্রান্তদের হোম কেয়ার পরিষেবা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে হোম কেয়ারে থাকা রোগীদের অবস্থার অবনতি হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। নিউ আলিপুরের বিপি পোদ্দার হাসপাতাল বেশ কয়েকজন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে হোম কেয়ার পরিষেবা দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর,বএই হাসপাতালে ৩৩ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া ১১ জন ডেঙ্গি আক্রান্তকে হোম কেয়ার পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে শয্যা ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে হোম কেয়ার পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। মূলত যে সমস্ত রোগীদের অবস্থা স্থিতিশীল তাদের এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। যদি ডেঙ্গি আক্রান্তের নাক থেকে রক্তপাত বা ত্বকে রক্ত জমাট বাঁধার মতো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায় তাহলে রোগীদের পরিবারকে হাসপাতালের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে অবিলম্বে ভর্তির জন্য বলা হচ্ছে।
আমরি হাসপাতালও এই পরিষেবা দিচ্ছে। এই হাসপাতালের তরফে কোভিডের সময়ের মতো একটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকরা কথা বলে নিয়মিত পরিষেবা দিচ্ছে এবং রোগীর প্লেটলেট গণনা এবং অন্যান্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সিইও রূপক বড়ুয়া জানান, ভর্তির চাপ কমাতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনেকের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়ির যত্ন সবার জন্য উপকারী। এরফলে রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আরএন টেগোর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্সেসও এই পরিষেবা চালু করেছে। এছাড়া, নারায়না হাসপাতাল, মেডিকা হাসপাতালেও এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে।