শুক্রবার বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই দুর্গাপুজো বন্ধ রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। যাঁদের অবশ্য অভিযোগ, এই রাজ্যে নাকি দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। আবার একইদিনে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি লেখা হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেখান জানানো হয়, এই পুজো উপলক্ষ্যে রাস্তায় যদি মানুষের ঢল নামে তাহলে করোনার সুনামি দেখা দেবে রাজ্যে। এবার খবর এল, পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যথাসম্ভব অনলাইনে করতে হবে। পুজো উপলক্ষ্যে করা যাবে না কোনও মেলা বা উৎসবের আয়োজন। এবার কোনও কার্নিভালও হবে না।
আগের দুটি ঘটনার সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগসূত্র আছে কিনা, তা জানা যায়নি। তবে করোনার জন্যই যাবতীয় সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। তবে দুর্গাপুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। এই বিষয়ে নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরই সেই গাইডলাইনকে স্বীকৃতি দিয়ে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের (এফএফডি) পক্ষ থেকে সব পুজো উদ্যোক্তাদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মণ্ডপ থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য সোজা গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যেতে হবে। কোনও ঘোরাঘুরি চলবে না। চারটি দিন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে। আগামী ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর, এই চারদিন রাখা হয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য। পুজো মণ্ডপে ঢোকা ও বেরনোর জন্য খোলামেলা এবং আলাদা রাস্তা রাখতে হবে উদ্যোক্তাদের। বড় পুজোর উদ্যোক্তাদের বলা হয়েছে, ভিড়ের কথা মাথায় রেখে মণ্ডপের প্রবেশপথে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে দর্শনার্থীদের জন্য গোল দাগ এঁকে দিতে হবে। সেখানেই দাঁড়াবেন দর্শনার্থীরা।
অন্যদিকে ফোরামের নির্দেশিকা অনুযায়ী, পুজো চলাকালীন কোনও জলসা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না। ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সম্পাদক শাশ্বত বসু জানান, এই বিধিনিষেধের অন্যতম কারণ হল, প্রতিমা দর্শনের পর দর্শনার্থীরা মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে যাবেন। তবে কোনও অনুষ্ঠান হলে তাঁরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে। তাই প্রতিটি পুজো কমিটির উদ্দেশে ফোরামের অনুরোধ, পুজো মিটে গেলে তারপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যেতে পারে।
যদি কোনও দর্শক মাস্ক ছাড়া আসেন, তাহলে পুজোর উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকেই তাঁকে মাস্ক দিতে হবে। অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে পুরোহিতদের মাইক্রোফোন দিতে বলা হয়েছে, যাতে ভিড় এড়িয়ে দূর থেকে মন্ত্র পড়তে পারেন। সিঁদুরখেলার সময়েও মানতে হবে দূরত্ববিধি। তবে নিয়ম শুধু দর্শকদের জন্য নয়, তা মানতে হবে পুজোর উদ্যোক্তাদেরও। এবার আরও বেশি সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছে কলকাতা পুলিশ।
প্রশ্ন উঠেছে, পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ার রাখা মানে তো মণ্ডপের ভিতরে দাহ্য পদার্থ রেখে দেওয়া। সে বিষয়ে কী ভাবছেন পুজোর উদ্যোক্তারা?