বারবার অভিযোগ তুলেছিল রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও তুলোধনা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। কারণ একটাই—নিজের ইচ্ছায় আইন না মেনে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন রাজ্যপাল। এককভাবে রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজ্যের চার বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের অভিযোগ তুলল রাজ্য সরকার। এমনকী এবার উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে রাজভবনকে বলা হল, রাজ্যপাল যেন তাঁর নির্দেশ প্রত্যাহার করেন। এমন চিঠি এই প্রথম। আগে কখনও হয়নি। সুতরাং লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।
যদিও এই চিঠি শিক্ষামন্ত্রী পাঠাননি। তবে উচ্চশিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ বিশেষ সচিব ওই চিঠিতে দাবি করেন, এই নিয়োগের বিষয়ে গত ৫ এপ্রিল রাজভবনের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা হয়েছিল। আর সেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লেখা হয়েছিল, শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্যপাল দার্জিলিং হিলস, ঝাড়গ্রাম সাধু রামচাঁদ মুর্মু, উত্তর ২৪ পরগনার হরিচাঁদ গুরুচাঁদ এবং হুগলির রানী রাসমণি গ্রিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। যদিও এমন কোনও সুপারিশ শিক্ষামন্ত্রী করেননি বলে দাবি তাঁর। আর তারপরই ওই রাজভবনের এক্স হ্যান্ডলের পোস্ট মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: বিমানের টিকিটে বিপুল ছাড়ের টোপ দিয়ে প্রতারণা, পা দিতেই ২৬ লক্ষ টাকা গায়েব
সূত্রের খবর, এই চিঠি পেয়ে বেজায় চটেছেন রাজ্যপাল। কারণ এটা সরাসরি তাঁকে নির্দেশ দেওয়ার সমান। এমন চিঠি আগে কখনও তিনি পাননি। রাজভবনে পাঠানো চিঠিতে ওই উচ্চপদস্থ বিশেষ সচিব লিখেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আচার্য সংশ্লিষ্ট নিয়োগগুলি প্রত্যাহার করুন। আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করার আগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করুন। সেটা না মানলে রাজ্য সরকার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে পারে। রাজ্য সরকারের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যপালের সঙ্গে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের নামের তালিকা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনা হয়। কিন্তু মতের মিল হয়নি। ওই তালিকা সুপ্রিম কোর্টকে জানানোর কথা ছিল।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেসব কথা সুপ্রিম কোর্টের কাছে না জানিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্দেশের একেবারে বিপরীতে গিয়ে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। আর সেই সিদ্ধান্ত এককভাবে নিয়েছেন আচার্য। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘এই নিয়োগ সম্পূর্ণ আইনবিরুদ্ধ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, দু’পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়নি। উনি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ এখন দেখার রাজ্যপাল কোন পথে হাঁটেন।