নিজের বাবার যৌন লালসার শিকার হয়েছিল নাবালিকা। একবার নয়, দু’বার নয়, টানা ৭ বছর ধরে তাকে লাগাতার ধর্ষণ করে গিয়েছিল বাবা। এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন নাবালিকার আত্মীয়-পরিজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা। সেই অপরাধে নাবালিকার বাবাকে কঠোর শাস্তি দিল আদালত। নিজের মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে ওই গুণধর বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল হাওড়া আদালত।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়িতে বিয়েবাড়ি থেকে চা বাগানে তুলে নিয়ে গিয়ে নাবালিকাকে গণধর্ষণ, ধৃত ৫
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছিল ২০১৮ সালে। মেয়েটি তারা বাবার সঙ্গে লিলুয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত। তখন বাড়িওয়ালার উদ্যোগে ধর্ষণের বিষয়টি জানাজানি হয়েছিল । বিষয়টি যখন প্রকাশ্যে আসে তখন মেয়েটির বয়স ছিল ১৫ বছর। জানা যায়, তার মা আগেই মারা গিয়েছিলেন। দিদিরও বিয়ে হয়ে যায়। তিনি শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। ফলে বাবার সঙ্গে লিলুয়ার ওই ভাড়া বাড়িতে থাকত নাবালিকা।
২০১৮ সালে একদিন ওই বাড়িওয়ালা তাদের ঘর থেকে মেয়েটির চিৎকার শুনতে পান। পরে তিনি মেয়েটির কাছ থেকে জানতে পারেন, ২০১১ সাল থেকে তার বাবা তাকে ধর্ষণ করে আসছে। এমন ঘটনা জানার পরেই কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বাড়ির মালিক। এরপর কিশোরীকে তার বাবার যৌন লালসা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন বাড়িওয়ালা। তিনি মেয়েটিকে থানায় নিয়ে গিয়ে তার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
সেই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরে নাবালিকার বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পর তার বিরুদ্ধে পকসো আইনের ৬ ধারায় চার্জ গঠন করে আদালত। এই মামলায় মোট ৭ জন সাক্ষী দিয়েছেন। নির্যাতিতা নাবালিকাও একটি লিখিত জবানবন্দি দিয়েছিলেন বিচারকের সামনে।
এই মামলায় মুখ্য সরকারি আইনজীবী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাধীর কঠোর শাস্তির আবেদন জানান। তাঁকে মামলায় সহযোগিতা করেন বিশেষ সরকারি আইনজীবী গৌতম দে ও রঞ্জন নায়েক। অবশেষে মামলায় অভিযুক্ত বাবাকে পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন বিশেষ আদালতের বিশেষ বিচারক সৌরভ ভট্টাচার্য।
এরপর দোষীর সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন । পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও দু বছর অতিরিক্ত কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্যাতিতা নাবালিকাকে ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।