গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এবার তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ল। এই ঘটনা রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। কারণ প্রায় ৮ জন মারা গিয়েছিলেন এই বহুতল বিপর্যয়ের জেরে। তারপর একটি কমিটি গঠন করেছিল কলকাতা পুরসভা। সেই কমিটি গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সাত সদস্যের এই কমিটি তদন্ত করে আজ শনিবার তদন্ত রিপোর্ট কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈনের কাছে জমা দেন। আর তার ভিত্তিতেই তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করল কলকাতা পুরসভা। মোট আটটি বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। সেখানে এই কমিটি ৬টি বিষয়ের উপর তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে বলে খবর। বাকি দুটি বিষয়ের উপর তদন্ত জারি আছে।
এই কমিটি যে তদন্ত করছিল সেটা শেষ হয়নি। তদন্তে এই তিনজন ইঞ্জিনিয়ারের কথা উঠে আসে বলে সূত্রের খবর। তাই নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেই ওই ইঞ্জিনিয়ারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরা আর কলকাতা পুরসভায় নেই। তদন্ত শেষ হয়ে ক্লিনচিট মিললে আবার তাঁরা কাজে যোগদান করতে পারবেন। তবে অনুমতি মিললে। এখনও পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে এলে তবেই বটা বোঝা সম্ভব হবে। এই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের বিল্ডিং বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বদলির মধ্যেই বিভাগীয় তদন্ত চলছিল। এবার তার মধ্যেই সাসপেন্ড করা হল তাঁদের।
আরও পড়ুন: রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনায় কালীঘাট মন্দিরে মুখ্যমন্ত্রী, নববর্ষের প্রাক্কালে দিলেন পুজো
এদিকে গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর মেয়র ফিরহাদ হাকিম ইঞ্জিনিয়ারদের উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। সরাসরি বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের তিনি কাঠগড়ায় তোলেন। তারপর ওই গার্ডেনরিচে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। কারণ গত ১৭ মার্চ সেখানে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়। এরপর মেয়র ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। তারপর ১৫ নম্বর বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করা হয়। যদিও সেই শোকজের জবাবে সন্তোষ প্রকাশ করেনি কলকাতা পুরসভা। এখন ওই ইঞ্জিনিয়ারদের কয়েক মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
অন্যদিকে এই বহুতল বেআইনিভাবে তৈরি হচ্ছিল বলে খবর। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। আর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এবার কলকাতা পুরসভায় যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে নিম্নমানের সামগ্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ছাড়াই বহুতলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যার জেরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। এখনও পর্যন্ত মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করা যায়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মাটি পরীক্ষার দায়িত্বে আছে। এই কাজে একটু বেশি সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।