দুর্গাপুজোর আগে তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল শান্তির বার্তা। তখন অবশ্য রাজ্যের সঙ্গে তাঁর সংঘাত চলছিল। পরে অবশ্য মিষ্টি পাঠানো, সাক্ষাৎ করা—এসবের মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হয়। দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে তাঁর অফিসের বাইরে ধরনায় বসেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন বেশ অশান্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্য–রাজনীতি এবং জাতীয় রাজনীতি। কারণ একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায়ের আন্দোলন নয়াদিল্লিতে গিয়ে পৌঁছেছিল। নাম না করে তখন শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আবার কালীপুজোর ঠিক একদিন আগে বাংলা ভাষায় আত্মদর্শন এবং আত্মশুদ্ধির বার্তা দিলেন রাজভবনের বাসিন্দা।
আজ, শনিবার রাজ্যপালের মুখে ‘জয় মা কালী’, ‘জয় পশ্চিমবঙ্গ’ শোনা গেল। রবিবার কালীপুজো। তার আগে আজ ব্যারাকপুর মণিরামপুর ইয়ংম্যান অ্যাসোসিয়েশনের কালীপুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বাংলাতেই রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছাবার্তা দেন তিনি। তবে এই আত্মদর্শন এবং আত্মশুদ্ধির সময় এখন বলার মধ্যে একটা বার্তা পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেটা হল, রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হয়েছেন ইডির হাতে। তার পর রাজ্যপালের মুখে আত্মদর্শন এবং আত্মশুদ্ধির কথা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
তাহলে কি রাজ্য সরকারকে বার্তা দিলেন রাজ্যপাল? এই ভিডিয়ো বার্তায় অবশ্য কারও নাম করেননি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, ব্যারাকপুর, নৈহাটির কালীপুজোর জন্য বিখ্যাত। তার মধ্যে এবার ৬৬ তম বছরে পা দিয়েছে মণিরামপুর ইয়ংম্যান অ্যাসোসিয়েশনের এই কালীপুজো। আর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘আমরা সকলে কালীপুজো ও আলোর উৎসব দীপাবলি পালনে ব্রতী রয়েছি। যাবতীয় কালিমা থেকে আমাদের মনকে শুদ্ধ করার এটা এক আদর্শ সময়। মা কালীর শাশ্বত আলোয় আমাদের সামনের পথ আলোকিত হোক। জয় কালী মা, জয় পশ্চিমবঙ্গ।’
আরও পড়ুন: বিএড কলেজ বাতিল হল কেন? শিক্ষা দফতর তদন্ত করবে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
তবে তিনি আরও একটি কথা বলেছেন। কোন বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল? রাজ্যপাল এদিন তাঁর বার্তায় বলেন, ‘বাংলার ভাই ও বোনেরা, আমরা সকলেই কালীপুজো এবং আলোক উৎসব দীপাবলি পালনে ব্রতী রয়েছি। এই উৎসব দৈনন্দিন জীবনের চাপ এবং জাগতিক কালিমা থেকে আমাদের মনকে শুদ্ধ করার এবং দেবতার কাছে প্রার্থনা করার একটি আদর্শ মাধ্যম। এখন আত্মদর্শন এবং আত্মশুদ্ধির সময়। সর্বব্যাপী মা কালী শাশ্বত আলোয় আমাদের সামনের পথকে আলোকিত করুন। জয় কালী মা, জয় পশ্চিমবঙ্গ।’ এখনের সময়টাকে আত্মশুদ্ধির সময় বলার নেপথ্যে কোনও বার্তা আছে বলেই মনে করা হচ্ছে।