কলকাতায় এখনও কি ব্রহ্মদত্যি আছে? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে শহরের আনাচে–কানাচে। কারণ এমন তথ্যই হাতে পেয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর তার জেরে তিনি বিপাকে পড়েছেন অশ্বত্থ গাছ কাটতে। এমন পরিস্থিতি যে হতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারছেন না। অথচ কলকাতা পুরসভা ভবনে কান পাতলেই এখন এই ঘটনা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। খোদ মেয়রকে এই নালিশ করেছেন এক নাগরিক। আর তারপরই খোঁজ নিতে গিয়ে যে তথ্য পেয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম তাতে একবার তিনি হাসছেন, আর একবার চিন্তায় পড়ছেন। এমন পরিস্থিতি তাঁর জীবনে আগে আসেনি।
ব্রহ্মদত্যি গাছে থাকে। এমন তথ্য শোনা গিয়েছিল বিলের জীবনে। যেখানে তাঁকে ভয় দেখাতে বলা হয়েছিল, চাঁপাগাছে ব্রহ্মদত্যি আছে। তাই ওখানে চড়লে ঘাড় মটকে দেবে ব্রহ্মদত্যি। কিন্তু বিলে অর্থাৎ নরেন্দ্রনাথ দত্ত এসব কথাকে আজগুবি বলে মনে করে ছিলেন। আর সারারাত সেখানে থেকে প্রমাণ করেছিলেন কোনও ব্রহ্মদত্যি নেই। ওসব হয় না। হ্যাঁ, এটা স্বামী বিবেকানন্দের শৈশবের ঘটনা। সাহস আর যুক্তি দিয়ে সবকিছু বিচার করতেন। কারও মুখের কথা নয়। কিন্তু তখন সেটা প্রমাণ হলেও এখন এমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে এখন কী হবে? উঠছে প্রশ্ন।
ব্রহ্মদত্যির সঙ্গে গাছ কাটার সম্পর্ক কী? এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ব্রহ্মদত্যি আছে তা মেনে নেওয়া কঠিন। কিন্তু এখন বিষয়টি দাঁড়িয়েছে যে, ‘ব্রহ্মদত্যি’ থাকার জন্য গাছ কাটা যাচ্ছে না! ব্রহ্মদত্যির ভয়ে সেখানে কেউ গাছ কাটতে যেতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। কলকাতা পুরসভার ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের অবিনাশ চৌধুরী লেনে এই ঘটনা এখন বড় আকার নিয়েছে। বাড়ির পাশেই রয়েছে অশ্বত্থ গাছ। আর তা কালের গতিতে বেড়ে উঠেছে। এমনকী বেড়ে উঠে সেই গাছ এখন বাড়ির ভিতরই ঢুকে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বাড়ির নানা অংশে ফাটল ধরিয়ে দিচ্ছে অশত্থ গাছ। এই সমস্যায় পড়ে অবিনাশ চৌধুরী লেনের জনৈক এক বাসিন্দা ফোন করেছিলেন খোদ কলকাতার মেয়রকে। গাছ কাটতে গেলে কলকাতা পুরসভার অনুমতি প্রয়োজন। আর কলকাতা পুরসভার লোক এসেই কেটে দেয়।
আরও পড়ুন: শিয়ালদা–হাওড়ায় একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন বাতিল, উইকেন্ডে বিপাকে নিত্যযাত্রীরা
তাই যোগাযোগ করেছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু অশ্বত্থ গাছ কাটার লোক পাওয়া যায় না। কারণ ওই গাছে ব্রহ্মদত্যি আছে বলে এলাকার মানুষের বিশ্বাস। তাঁরা ভাবেন, ওই অশ্বত্থ গাছে ব্রহ্মদত্যি আছে। তাই গাছ কাটতে রাজি নন তাঁরা। এইসব কথা শুনে মেয়রের মাথায় হাত। এমন বিপাকে পড়ে মেয়র শেষে কোনও উপায় না দেখতে পেয়ে অবিনাশ চৌধুরী লেনের ওই বাসিন্দাকেই জানান, লোক জোগাড় করে পুজো করিয়ে গাছ কাটতে। তাতে কলকাতা পুরসভা অনুমতি দেবে। কিন্তু ব্রহ্মদত্যির ভয়ে ওই অশ্বত্থ গাছ কাটার লোক এখনও মেলেনি বলেই খবর।