আবার মহানগরীর মানুষজনের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। শহরের বিভিন্ন বাড়িতে থাকে ফেরুল। এই ফেরুলের মাধ্যমে জল আসে। আর তা যদি পরিষ্কার না থাকে তাহলে জল সরবরাহের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটে। তাতে বিপদে পড়েন সংশ্লিষ্ট বাড়ির বাসিন্দারা। আবার এলাকার ফেরুল পরিষ্কার না থাকলে সমস্যায় পড়েন এলাকাবাসী। এই ফেরুল পরিষ্কার করতে এতদিন টাকা গুণতে হতো। এখন থেকে শহরে ফেরুল পরিষ্কার করতে আর লাগবে না কোনও খরচ। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই ফেরুল পরিষ্কারের ‘মূল্য’ তুলে দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিকে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই খুশির হাওয়া বইছে তিলোত্তমায়। আগে কলকাতার এক থেকে একশো নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত ফেরুল পরিষ্কার করতে কোনও খরচ করতে হতো না। কিন্তু কলকাতার সংযোজিত এলাকায় প্রতি ফেরুল পরিস্কারে খরচ ছিল ১০০ টাকা। সেটা অবশ্য খাতায় কলমে। অথচ এই কাজ করতে অনেক সময় কয়েক হাজার টাকাও খরচ হতো। ফেরুল পরিষ্কার করতে গিয়ে পকেটে চাপ বাড়ত। আসলে ফেরুল মাটির যত গভীরে থাকে ততটা খুঁড়তে হয়। সেটাই খরচ সাপেক্ষ বিষয়। আর তাই লেবার চার্জের টাকাও লাগত বেশি। এখন কলকাতায় ফ্ল্যাটের সংখ্যা বাড়ছে। তাই জলের জন্য ফেরুল বসছে। তা পরিষ্কার করতে খরচও হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘উনি আমাদের মধ্যে নেই– জেলে আছেন’, পার্থকে খোঁচা দিয়ে দীর্ঘ পোস্ট হিরণের
অন্যদিকে এবারের কলকাতা পুরসভার বাজেটে পরিকল্পনায় ঠিক হয় সংযোজিত এলাকায় ফেরুল পরিষ্কারের জন্য একশো টাকার জায়গায় পাঁচশো টাকা নেওয়া হবে। কিন্তু শনিবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পরিষ্কার বলেন, ‘বাজেটে বইয়ের মধ্যে একটা ভুল ছাপা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছিল একশো টাকা থেকে পাঁচশো টাকা করা হবে ফেরুল পরিস্কারের চার্জ। এখন কলকাতাকে আর এভাবে আলাদা করা হবে না। গোটা কলকাতাই এক। তাই সংযোজিত এলাকায় আর কোনও খরচ লাগবে না।’ সুতরাং শহরবাসীকে বড় চাপ থেকে মুক্তি দিলেন মেয়র। এই খবরে খুশি কল্লোলিনীর বাসিন্দারা।
এছাড়া ফেরুল পরিষ্কারের বিষয়ে মেয়র জানান, আগে সংযোজিত এলাকার ফেরুল পরিস্কারের জন্য কাজ করত কন্ট্র্যাক্টররা। এখন গোটা কলকাতাতেই একইভাবে কাজ হবে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের একেকটি প্রেমিসেস পিছু একটি করে ফেরুল থাকে। সংযোজিত এলাকায় এখন ফ্ল্যাটের সংখ্যা বাড়ছে। এতদিন সেখানে ফেরুল পরিষ্কারের টাকা গুনতে হতো বাসিন্দাদের। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ঘোষণায় সেটার থেকে মুক্তি পেলেন কলকাতার বাসিন্দারা। তাই টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে অনেকে ধন্যবাদ জানান মেয়রকে। এমনকী বামফ্রন্টের কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব প্রশংসা করে বলেছেন, ‘ফেরুল পরিস্কার করার কাজে কিছু অসাধু লোক আমজনতার কাছ টাকা হাতিয়ে নিতেন। তার সঙ্গে রাস্তা খোঁড়াখুড়ির জেরে খানাখন্দ তৈরি হতো। মেয়রের এই ঘোষণায় আশা করি সেটা কমবে।’