সদ্য বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন তমোঘ্ন ঘোষ। তৃণমূলের প্রাক্তন এই ছাত্রনেতাকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ঝড় উঠেছে। সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তমোঘ্ন ২০২১ সালে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। কল্যাণ চৌবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হতেই উত্তর কলকাতার দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁরই ঘাড়ে। আর এরপরই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়। এই ইস্যুতে মুখ খোলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও।
তমোঘ্ন ইস্যুতে কুণাল বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, সুদীপদাই পরিকল্পনা করে তমোঘ্নকে বিজেপিতে পাঠিয়েছে। পরে আবার ফিরিয়ে আনবে।’ কুণাল আরও বলেন, ‘আদি বিজেপি নেতাদের থুতু ফেলে ডুবে মরা উচিত। কাউকে খুঁজে পাচ্ছিল না।’ এদিকে তমোঘ্নকে নিয়ে তাপস রায় বিস্ফোরক সব অভিযোগ করেন উত্তর কলকাতার সাংসদের বিরুদ্ধে।
গতকাল নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস রায় বলেন, ‘তমোঘ্নর বাবা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ। তমোঘ্নকে নিয়ে গিয়ে দিদির সামনে ছাত্র পরিষদের সভাপতি করার কথা বলেছিলেন সুদীপ। ওঁদের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। অষ্টমীর দিন সুদীপ, শুভেন্দু দুজনেই ওদের বাড়ি গিয়েছিলেন। কল্যাণ চৌবেও ছিলেন সেখানেই।’
উল্লেখ্য, প্রয়াত সোমেন মিত্রের হাত ধরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তমোঘ্ন। আর একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তমোঘ্ন যোগ দেন বিজেপিতে। এহেন নেতার বিজেপিতে পদ প্রাপ্তিতে ঝড় উঠেছে তৃণমূলে। অপরদিকে উত্তর কলকাতার রাজনীতিতে সুদীপ এবং তাপস একই দলে থাকলেও বিপরীত মেরুতে অবস্থান করেন। একুশের নির্বাচনের পর সুদীপকে সরিয়ে তাপসকে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়েছিল। পরে চলতি বছরই সুদীপকে সেই পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে দুই নেতার সম্পর্কে চিড় আরও চওড়া হয়। এই আবহে সুদীপের নাম করে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে তাপস বলেন, ‘দলের উচিত যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দলের কাছে আনুগত্য দেখিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আস্থা রাখা। দলে এমন অনেক লোক রয়েছেন যাঁরা দলনেত্রীকে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন। সঙ্গে বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন।’