পার্কস্ট্রিটের একটি হোটেল থেকে এক মহিলার দেহ উদ্ধার করা হল। এই রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। কিড স্ট্রিটের ওই হোটেলের একটি ঘর থেকে দুই মহিলাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই দুই মহিলা সম্পর্কে মা–মেয়ে। এই অবস্থায় উদ্ধার করে দু’জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে মাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসা চলছে। তদন্তে নেমেছে নিউ মার্কেট থানা। পুলিশ গিয়ে হোটেলের ঘরের দরজা খুলে মা এবং মেয়েকে উদ্ধার করে।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম পলি মিত্র। তিনি মেয়েকে নিয়ে ওই হোটেলে উঠেছিলেন। আর এদিন দু’জনকেই অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তারপর তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে দেহের পাশেই পাওয়া গিয়েছে একটি সুইসাইড নোট। ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। দু’জনই কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা। গত ৮ জুন থেকে তাঁরা এই হোটেলে থাকতে শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তে আর্থিক সমস্যার জেরে মানসিক অবসাদ এবং আত্মহত্যার তত্ত্ব উঠে এসেছে। সবটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত করার পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? পুলিশ যে সুইসাইড নোট পেয়েছে সেটা থেকে মানসিক অবসাদ এবং আর্থিক সমস্যার কথা জানতে পেরেছে। এই রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে আসল ঘটনা কী তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে অবসাদের জেরেই কি মা–মেয়ের আত্মহত্যার চেষ্টা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হোটেলের বিভিন্ন সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এই আত্মহত্যা বা হত্যা যাই হয়ে থাক সেটি ঘটেছে বেশি রাতের দিকে। ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছে না দেখে হোটেল কর্মীদের সন্দেহ হয়। তখন তাঁরা খোঁজ করতে গিয়ে সাড়া পান না। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পুলিশে খবর দেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর রক্ষাকবচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বিচারপতি, তোলপাড় কলকাতা হাইকোর্ট
তারপর ঠিক কী ঘটল? পুলিশ এসে দরজা খুলে দেহ দুটি উদ্ধার করে। হরিদেবপুরের ফ্ল্যাটে থাকতেন পলি মিত্র ও তাঁর মেয়ে ঈশিতা মিত্র। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তাঁরা সেই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এসে হোটেলে ওঠেন। তিন বছর আগে পলি মিত্রের স্বামী মারা যান। তখন থেকেই সংসারে অভাব–অনটন শুরু হয়। সংসারে নেমে আসে আর্থিক দুরবস্থা। এক মেয়ে ছাড়ায় পলি মিত্রের এক ছেলে আছে। তাঁর বিয়ে হয়েছে ১০ বছর আগে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আলাদা থাকেন তিনি। আর মায়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেন না। এমনকী দেখাশোনাও করতেন না। টাকা দিয়ে সাহায্যও করেননি বলে সূত্রের খবর।