তাঁর সই করা বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ওয়েবসাইট থেকে সরতেই সংসদের সচিব পদে জ্যোতিপ্রিয়র কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। বিকাশ ভবনের কর্তাব্যক্তিদের একাংশের মতে বিজ্ঞপ্তি সরানোর মাধ্যমে আসলে প্রিয়দর্শিনীকে সরানোর প্রক্রিয়াই শুরু হয়েছে। তবে এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীই নেবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্ষদের গায়ে আগেই কালি লেগেছে। বাদ যায়নি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও। এই পরিস্থিতিতে সংসদের সচিব তথা রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে প্রিয়দর্শনীকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে তারা। জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারির পর তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে একের পর এক অভিযোগ। ভুয়ো কোম্পানি চালানো থেকে, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকী গৃহশিক্ষকতা করে তিনি এক বছরে ৩.৫ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন বলে আয়কর রিটার্নে দাবি করেছেন তিনি। এছাড়া প্রিয়দর্শিনীর ব্যাঙ্কের লকারের চাবি এখন রয়েছে ইডির কাছে।
সংসদের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, প্রিয়দর্শিনীকে যে কোনও সময় ইডি তলব করতে পারেন। সচিব পদে থাকা একজনকে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইডি ডাকলে সংসদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যেতে পারে। তাই আগেভাগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে তাঁরা।
পালটা আরেক পক্ষের দাবি, কারও বাবা অভিযুক্ত হলেই যে মেয়ে অভিযুক্ত হবেন এমন কোনও কথা নেই। তাই প্রিয়দর্শিনীর বিরুদ্ধে ধর্তব্যযোগ্য প্রমাণ প্রকাশ্যে না আসা পর্যন্ত তাঁকে অপসারণ করা সম্ভব নয়। তবে ২ পক্ষই একটি বিষয়ে সহমত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অজ্ঞাতে প্রিয়দর্শিনীর নিয়োগ হয়নি। ফলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনিই।
বলে রাখি, মাত্র ২ মাস আগে প্রিয়দর্শিনী মল্লিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সোমবার প্রথম তাঁর সই করা কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। প্রকাশের ৭ ঘণ্টার মধ্যে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেয় সংসদ। এই পদের মেয়াদ ৩ বছর। এই পদে যোগদানের আগে আশুতোষ কলেজে অণুজীববিদ্যার শিক্ষিকা ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে।