আজ, শুক্রবার থেকে রেড রোডে বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর ২টো থেকে ৪৮ ঘণ্টা চলবে মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনা কর্মসূচি। আগামীকাল শনিবার, ১০০ দিনের কাজের বঞ্চিত শ্রমিক এবং আবাসের বঞ্চিতদের নিয়ে রেড রোডে ধরনায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আর তারপরই এক ভিডিয়ো বার্তায় জানান, বাংলার মানুষের বকেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। এটাকেই সুর নরমের বার্তা হিসাবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রেড রোডে ধরনায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর ১টায় শুরু হবে তৃণমূলনেত্রীর ধরনা। আর শনিবার ১০০ দিনের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পের বঞ্চিতদের নিয়ে রেড রোডে সমাবেশ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধরনাও চলবে। এমন আবহে রাজ্যপাল তাঁর ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, বাংলার মানুষকে ন্যায় দিতে যা প্রয়োজন, দ্রুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সেই পদক্ষেপ করবে ভারত সরকার। যদিও কেন্দ্রের এই ‘প্রতিশ্রুতি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভরসা যোগ্য হয়ে ওঠেনি। তাই শান্তিপুরের কর্মসূচি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বাংলার বকেয়া নিয়ে শুক্রবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধরনায় আমি নিজে থাকব।’ শনিবার আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ–সহ কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত মানুষের জমায়েতেও বক্তব্য রাখবেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের নানা শাখা সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ধরনা–অবস্থান চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এই কর্মসূচিকে নানা জেলায় পৌঁছে দেওয়ারও বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। এই বিষয়ে দলনেত্রীর নির্দেশ, ‘এই ধরনা কন্টিনিউ করবে আমাদের বিভিন্ন ইউনিট। আপনারাও জেলায় জেলায় করবেন। বুথে বুথে করবেন। ব্লকে ব্লকে করবেন।’ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রাপ্য আদায়ে বেশ কয়েক দফায় নয়াদিল্লিতে দরবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রাপ্য আদায়ের দাবি রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর একমাসের বেশি সময় কেটে গেলেও, বাংলার হকের টাকা মেটাতে কেন্দ্রের কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখা যায়নি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এবার আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুন: পিনারাই বিজয়নের মেয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে নির্দেশ কেন্দ্রের, দায়িত্ব পেল এসএফআইও
এছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক ও দলীয় কাজকর্ম চালানোর জন্য ধরনা মঞ্চের পাশেই আলাদা ব্যবস্থা থাকছে। ধর্না কর্মসূচির যাবতীয় প্রস্তুতির দায়িত্বে রয়েছেন সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসরা। ধরনা মঞ্চের পাশে আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যে কোনও প্রশাসনিক কাজ সেখান থেকে করতে পারবেন। আর দলীয় বৈঠকের জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই বর্ধমান জেলার দলীয় বৈঠক এখানে হওয়ার কথা আছে। আর আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর নয়াদিল্লি যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।