চারিদিকে মানুষের ভিড়। সকলে জানাতে এসেছেন তাঁদের শেষ শ্রদ্ধা। কেউবা চেনা মানুষটাকে শেষবার চোখের জলে বিদায় জানাতে এসেছেন। তারই মাঝে পরিবারের সদস্যদের আকুল কান্না, আর্তনাদ। বাড়িতে দেশের জন্য কর্তব্যপালনে বেরিয়েছিলেন জওয়ান প্রেমকুমার চৌধুরী। আজ শুক্রবার ফিরল তাঁর মরদেহ। শোকের ছায়া কাঁচরাপাড়ায়। ‘গার্ড অফ অনার’ দিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানায় ভারতীয় সেনা।
ভারতীয় সেনা জওয়ান প্রেমকুমার চৌধুরী লাদাখে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে তিনি কিছু জিনিস আনতে গিয়েছিলেন কার্গিলে। ফেরার পথেই ঘটে বিপত্তি। গাড়ি পড়ে যায় খাদে। নিমেষে মৃত্যু। আর সেই ঘরের ছেলের মৃতদেহ আজ ফিরল কাঁচরাপাড়ায়। চোখের জল, আর বুকভরা হাহাকারের মধ্য দিয়ে পূর্ণ মর্যাদায় প্রেম কুমার চৌধুরীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে এদিন গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁরাপাড়ার বাড়িতে প্রেমকুমার চৌধুরীর শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন, ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ অর্জুন সিং, রাজ্যের সেচমন্ত্রী মন্ত্রী তথা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক, বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারী সহ এলাকার বহু মানুষ। উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ মৃত্যু হয়েছে কাঁচরাপাড়ার এই বীরযোদ্ধার। তাঁকেই চোখের জলে বিদায় দিল পরিবার সহ গোটা এলাকা।
জওয়ানের শেষকৃত্যে এসে এলাকার বিদায়ী সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, ‘ আমাদের এলাকার ছেলে, দেশের ছেলে। এই ভাবে প্রাণ চলে গেল কী বলব।’ তিনি বলেন,'এ ভাবে বীর প্রেমকুমারকে চলে যেতে হবে ভাবতে পারিনি। তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানিয়ে গেলাম।' তিনি বলেন,' ওঁর পরিবারের পাশে আছি। খুব দুঃখিত, মর্মাহত। ওর বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গেও কথা বলেছি।' সাংবাদিকদের মখোমুখি হয়ে অর্জুন সিং বলেন, বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। উল্লেখ্য, প্রেমকুমার চৌধুরী গত ১৫ মার্চ লাদাখ থেকে গিয়েছিলেন কার্গিলে। এরপর তিনি ফিরে আসছিলেন ১৯ মার্চ। সেইদিনই তাঁদের গাড়ি পড়ে যায় খাদে। গাড়ি সেখানে পড়তেই আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। প্রেমকুমার চৌধুরীকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। তবে ততক্ষণে যাবতীয় চেষ্টা শেষ। জানা যায়, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে প্রেমকুমারের। এরপর শুক্রবার কাঁচরাপাড়ার সিটি বাজারে ফেরে তাঁর দেহ। প্রেমকুমারকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে বহু মানুষের ভিড় হয় এলাকায়।