বিশ্বজুড়ে ছাঁটাই চলছে ক্রমাগত। ২০২৩ সালের আর্থিক মন্দার পর ২০২৪ সালেও কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না অর্থনীতিবিদরা। একটি রিপোর্ট বলছে, ২০২৩ সালে কারিগরি সংস্থাগুলিতে ২ লক্ষ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন। google, amazon, microsoft, Meta, Nokia ইত্যাদি নানা সংস্থার কর্মীরা তাদের চাকরি হারিয়েছেন। পেটিএম, শেয়ার চ্যাট, বাইজুসের মতো প্রযুক্তি সংস্থাগুলিও ব্যাপক হারে চাকরিতে ছাঁটাই করেছে। লকডাউন, করোনা অতিমারি এবং সাময়িক কিছু সমস্যা সেই সময় কারণ হিসাবে দেখানো হলেও ২০২৪ সালেও দেখা যাচ্ছে ছাঁটাই অব্যাহত থাকছে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থাগুলিতে।
কারিগরি layoffs.fyi সংকলিত তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে ১১৮৯ টি কোম্পানি মোট ২ লক্ষ ৬২ হাজার ৫৯৫ জন কর্মীকে বরখাস্ত করেছিল। সাম্প্রতিক ইতিহাসে চাকরি ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে এটি ছিল সবথেকে খারাপ একটি বছর। ২০২২ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল এই ছাঁটাই। বহু প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হলেও ২০২৪ সালেও কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না সেই চিত্রে। ১১৫টি প্রযুক্তি সংস্থা তাদের ৩০ হাজার ৩৭৫ জন কর্মীকে গোলাপি স্লিপ ধরিয়েছে, অর্থাৎ ছাঁটাইয়ের জন্য তাদের প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে। পে-পাল, অনলাইন পেমেন্ট কোম্পানি তাদের কর্মী সংখ্যা ৯ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করছে। ২৫০০ জন কর্মীকে গোলাপি স্লিপ ধরানো হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে।
SAP, Alphabet, Micriosoft, Paypal-এর মতো কোম্পানি একের পর এক কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছিল। এবার কার্যত সেই রাস্তাতেই হাঁটছে উইপ্রো’র মত টেক জায়েন্টও। গত বছরে জানা গিয়েছিল, ডিসেম্বর থেকে কর্মচারীদের বেতন বাড়াতে চলেছে উইপ্রোর। তবে সকলের বেতন নাও বাড়তে পারে বলে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে ‘টপ পারফর্মার’-দের বেতন বেশি, তাঁদের ইনক্রিমেন্ট নাও দিতে পারে উইপ্রো। অর্থাৎ তাদের বেতন নাও বাড়ানো হতে পারে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। সার্বিকভাবে বিশ্বজুড়ে বেসরকারীকরণ এবং কর্পোরেট কোম্পানিগুলির লাগামহীন ছাঁটাই বিপদে ফেলছে সাধারণ কর্মীদের। বড় বড় অর্থনীতিবিদরা উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না, কোন পথে সমস্যার সমাধান। বহুজাতিক প্রাইভেট কোম্পানিগুলি যে সোনালী স্বপ্ন দেখিয়েছিল কোটি কোটি কর্মচারীদের, প্রশ্ন উঠছে সেই স্বপ্ন অলীক কল্পনা নয়তো!