শুভব্রত মুখার্জি: ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন হিসেবে পরিচিত। অধিনায়ক থাকাকালীন তিনি ভারতীয় ক্রিকেটে ফিটনেস বিপ্লব এনেছিলেন। তিনি প্রত্যেক ক্রিকেটারের জন্য ইয়ো-ইয়ো টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছিলেন এবং এটি শেষ পর্যন্ত খেলার দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে দলকে সাহায্য করেছিল। এদিকে, ২৪ অগস্ট বৃহস্পতিবার নিজের ইয়ো-ইয়ো টেস্টের ফল সকলকে জানান বিরাট কোহলি।
ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। কারণ তিনি তাঁর ফিটনেস স্তরকে ১৭.২ এর টাইম ট্রায়ালে উন্নীত করেছিলেন। ক্রিকেটার এটি তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে শেয়ার করেছেন এবং এতে নিজের আনন্দ প্রকাশ করেছেন বিরাট কোহলি। বিরাট কোহলি লিখেছেন, ‘ভয়ঙ্কর শঙ্কুর মধ্যে ইয়ো ইয়ো পরীক্ষা শেষ করার সুখ। ১৭.২ সম্পন্ন করলাম।’
আসন্ন এশিয়া কাপের প্রস্তুতি সারতে ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুর আলুরে বিসিসিআই অনুষ্ঠিত শিবিরে উপস্থিত হয়েছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার মতন তারকা ক্রিকেটাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফিরেছেন যে সমস্ত ক্রিকেটার, তাদেরকে বিসিসিআইয়ের তরফে ১৩ দিনের ফিটনেস প্রোগ্রাম দেওয়া হয়েছে। এরপরেই প্রত্যেকের ফিটনেস পরীক্ষা করা হবে। শরীরের সম্পূর্ণ টেস্ট করা হবে বিসিসিআইয়ের তরফে। পাশাপাশি তাদের রক্ত পরীক্ষাও করা হবে। যারা নির্ধারিত যোগ্যতামানে পৌঁছাতে পারবেন না তাদেরকে বিসিসিআই ফের নজরে রাখবে। বিশ্বকাপের বছরে দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যে সব ক্রিকেটাররা গিয়েছিলেন তাদের কেউ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে অংশ নেননি। ১৩ দিনের যে প্রোগ্রাম বিসিসিআইয়ের তরফে দেওয়া হয়েছে তা মেনে চলবেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, শিখর ধাওয়ান, রবীন্দ্র জাদেজা, মহম্মদ শামি এবং মহম্মদ সিরাজ। ফিটনেস প্রোগ্রামকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মাঝে রয়েছে একটি বিশ্রামের দিন। ৯ অগস্ট থেকে এই প্রোগ্রাম শুরু হয়। শেষ হয়েছে ২২ অগস্ট। এই প্রোগ্রাম এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে প্রতিটি ক্রিকেটার ম্যাচ ফিট থাকেন। বিশ্বকাপের আগে যাতে চোট আঘাতমুক্ত থাকেন ক্রিকেটাররা। কোন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার যাতে চোটের কবলে না পড়েন, ভারতের বিশ্বকাপ অভিযানের যাতে করে সমস্যা না হয় সে কথা মাথাতে রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফিজিওথেরাপিস্ট এবং প্রশিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেই গোটা প্রোগ্রামটি তৈরি করেছে এনসিএ। প্রস্তুতি শিবিরে ক্রিকেটারদের ফিটনেসের লেভেল বুঝে নেওয়াই এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য ছিল। প্রতিটি ক্রিকেটারকে তাঁর রুটিন এবং ডায়েট আলাদা আলাদা করে দেওয়া হয়। তা কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশও দেওয়া হয়। গ্লুট মাসেল, কাঁধ, মাঠে চলাফেরা এবং শক্তি এই চারটি বিষয়ে ক্রিকেটাররা কী পরিস্থিতিতে রয়েছেন তা বুঝতেই এই প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ক্রিকেটারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রোটিন নিতে হত। জিম করতে হত। হাঁটা, দৌড়ানোর পাশাপাশি ছিল সাঁতার কাটতে হত। ছিল যোগা সেশন এবং সবশেষে ম্যাসাজ। বোলার এবং ব্যাটারদের জন্য আলাদা আলাদা কিছু ড্রিলও ছিল। প্রতিটি ক্রিকেটারকে নয় ঘন্টা ঘুমানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।