১৯৩২ সালে প্রথম নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, দুই দলের সেটিই ছিল প্রথম টেস্ট সিরিজ। এর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে লম্বা সময় নির্বাসনেও ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সব মিলিয়ে গত ৯২ বছরে নিউজিল্যান্ডের কাছে কোনও সিরিজ হারেনি তারা। আগের ১৭টি সিরিজের ১৩টিতেই জিতেছে, ড্র হয়েছে ৪টি। ১৮তম সিরিজে এসে অবশেষে কিউয়িদের কাছে হারতে হল প্রোটিয়াদের। এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কোনও টেস্ট সিরিজে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল নিউজিল্যান্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চলার কারণে, দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে তারা নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছে। আর সেই সফরে এসেই তাদের ল্যাজেগোবরে হতে হল। প্রথম টেস্টে উড়ে যাওয়ার পর অবশ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার অনভিজ্ঞ দল দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনেও জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। তবে সেই স্বপ্ন ভেঙে দিলেন কেন উইলিয়ামসন। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করলেন উইল ইয়ং।
আরও পড়ুন: অভিষেক টুপি দেওয়ার সঙ্গে নিজের ব্যাডলাকটাও সরফরাজকে দিয়ে ফেলেছি- আফসোস কুম্বলের
দ্বিতীয় টেস্ট জিততে প্রোটিয়াদের দরকার ছিল নয় উইকেট। সম্বল ছিল ২১৭ রান। এই মাঠে এর আগে কখনও-ই এত রান তাড়া করে জেতেনি কোনও দল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে আশা জোগানোর মতোই পরিসংখ্যান ছিল।
শুক্রবারও দিনের শুরুতেই টম লাথামকে ফেরান ডেন পিট। যিনি প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বাধা হয়ে দাঁড়ালেন সেই কেন উইলিয়ামসন। ক্যারিয়ারের ৩২তম সেঞ্চুরি করে কিউয়িদের জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করে দেন উইলিয়ামসন। তাঁর অপরাজিত ১৩৩ রানের সঙ্গে যোগ হয় উইল ইয়ংয়ের অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংস। যার সৌজন্য হ্যামিল্টনে ৭ উইকেটে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড। দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জেতে কিউয়িরা। ইতিহাসে এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজে হারাল নিউজিল্যান্ড।
আরও পড়ুন: দুরন্ত ছন্দে থাকা সরফরাজ রানআউট হন তাঁর ভুলেই, করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন জাড্ডু
২৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বৃহস্পতিবার ডেভন কনওয়ের উইকেট হারিয়ে ৪০ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। শুক্রবার সকালে উইলিয়ামসন দ্বিতীয় উইকেটে রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির আগে-পরে যোগ করেন ৬৪ রান। সেই জুটিও ভাঙেন পিট, তাঁর বলে অধিনায়ক নিল ব্র্যান্ডের হাতে শর্ট কাভারে ক্যাচ দেন রবীন্দ্র। তখনও নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৫০ রান।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে এর পর শুধু হতাশই করে যান উইলিয়ামসন। এবার সঙ্গে পান উইল ইয়ংকে। দু'জনের জুটির প্রথম ৫০ রানের মধ্যে উইলিয়ামসন একাই করেন ৪১ রান। চা-বিরতির আগেই অবশ্য নিউজিল্যান্ডের পায়ের তলার জমি শক্ত করে ফেলেছিলেন উইলিয়ামসন। বিরতির পর শন ফন বার্গের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের ৩২তম শতক পূর্ণ করেন তিনি। শেষ ৭ টেস্টে উইলিয়ামসনের এটি সপ্তম সেঞ্চুরি। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে এটি পঞ্চম শতরান তারকা কিউয়ি ব্যাটারের। এ ক্ষেত্রে শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক ইউনিস খানকে ছুঁয়ে ফেললেন তিনি। সেই সঙ্গে ম্যাচ জিতিয়ে, নিউজিল্যান্ডকে ইতিহাস লিখতে সাহায্য করেন উইলিয়ামসন।