এমএস ধোনির অধিনায়কত্বে নানা চমক দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ক্যাপ্টেন মাহির ক্যারিয়ারের অন্যতম মাস্টারস্ট্রোক হল ২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে অভিজ্ঞ হরভজন সিংয়ের পরিবর্তে যোগিন্দর শর্মাকে শেষ ওভারের বল করতে দেওয়া সিদ্ধান্ত। এটি যে ধোনির একটি সাহসী পদক্ষেপ ছিল সেটি সকলেই মেনে নিয়েছেন। তবে বর্তমানে যুবরাজ সিং জানিয়েছেন এই ঘটনার পিছনের আশ্চর্যজনক একটি ঘটনার কথা। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পিছনে কার সবথেকে বড় হাত ছিল তা জানিয়েছিলেন যুবি। তিনি বলেছেন যোগিন্দর শর্মাকে শেষ ওভারে বল দেওয়ার সিদ্ধান্তের পিছনে বড় ভূমিকা ছিল হরভজন সিং-এর। এরপরেই ভক্তদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এতদিন যোগিন্দর শর্মাকে বিশ্বাস করার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হত ধোনিকে, তবে এবারে মাহিকে ছোট করতে হরভজন ও যুবির ভক্তেরা মাঠে নেমে পড়েছেন।
কী বলেছেন যুবরাজ সিং?
এই বিতর্কটা শুরু হয়েছিল রণবীর আল্লাহবাদিয়ার 'দ্য রণবীর শো'-থেকে। এই শো-তে যুবি জানিয়েছিলেন, ‘আসলে এটি একটি সিদ্ধান্ত ছিল যেখানে ভাজ্জির শেষ ওভারটি বল করার কথা ছিল। ধোনি এবং আমি তাঁর কাছে গিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম যে, তাঁর যা অভিজ্ঞতা তাতে এই মুহূর্তে শুধুমাত্র আপনাকেই বল করতে হবে। সেটা শুনে, ভাজ্জি বলেছিলেন, ‘আমি মিসবাহকে এক ওভার বল করেছি, ইয়র্কারের চেষ্টা করেছি এবং সে আমাকে তিনটি ছক্কা মেরেছিল, তাই একজন ফাস্ট বোলারের সঙ্গে যাওয়া দরকার।’ যুবরাজ আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে, ‘ভাজ্জির পরামর্শেই ধোনির গুরুত্বপূর্ণ ওভারটি তুলনামূলকভাবে অনভিজ্ঞ যোগিন্দর শর্মার হাতে তুলে দেওয়া হয়। যোগিন্দর শর্মা পাকিস্তানের মিসবাহ-উল-হককে আউট করার ফলে খেলার সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে ভারতের জন্য জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ভাজ্জির এই চালটি দুর্দান্তভাবে সফল হয়েছিল।’
সোশ্যাল মিডিয়াতে শুরু বিতর্ক
যুবির মুখে এই বক্তব্য শোনার পরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ধোনিকে একহাত নিতে শুরু করেছেন যুবরাজ এবং হরভজনের ভক্তরা। তাদের যুক্তি, যোগিন্দর শর্মাকে বল দেওয়ার ক্রেডিটটা মাহির ভাগ করা উচিত ছিল। যখন ধোনির অনুগত সমর্থকরা আবেগের সঙ্গে সিদ্ধান্তে তার ভূমিকা রক্ষা করেছিলেন। কেউ কেউ ধোনিকে যথাযথ কৃতিত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। অন্যরা হরভজনকে তার গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের জন্য প্রশংসা করেছেন।
একজন নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, ‘২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যোগিন্দর শর্মাকে শেষ ওভার দেওয়ার বিষয়ে যুবরাজ সিং বলেছিলেন - ‘ভাজ্জি সেই পরামর্শ দিয়েছেন!’ কিন্তু এখানে থালা ভক্তরা ক্রেডিট চুরি করতে ব্যস্ত।’ অন্য একজন মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘এমএসডির এই ধরনের মিথ্যা ও ক্রেডিট নেওয়া একেবারেই ভালো নয়। এটা প্রকাশ্যে প্রকাশ করার জন্য যুবিকে ধন্যবাদ। হরভজন সিং আপনাকে শুভকামনা।’
এরপরে মাহির ভক্তেরা সেই ম্যাচে ধোনির একটি বক্তব্য চালিয়েছিলেন যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায় যে, শেষ ওভারটি ভাজ্জির করার কথা ছিল কিন্তু সে আত্মবিশ্বাসী ছিল না বলেই যোগিন্দরকে বল করতে দেওয়া হয়েছিল। ধোনির ভক্তেরা বলতে থাকেন যে সেই দিনেই হরভজনের কথা বলেছিলেন থালা। তবে এরপরে যুবি ভক্তেরা সেই ইন্টারভিউর পুরো ভিডিয়ো শুনিয়ে বলেন কোথায়, ধোনি তো কোনও ভাবেই ভাজ্জিকে ক্রেডিট দেননি। হরভজনের ভক্তেরা লেখেন, ‘কোথায় ধোনি বলেছিলেন যে এটা ভাজ্জির পরামর্শ ছিল। যা তিনি নিয়েছেন? এটা তিনি নিজের সিদ্ধান্ত বলে চালিয়েছিলেন এবং স্পষ্টভাবেই বলেছেন। অবশ্যই একজন অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে কল নিতে হবে। যেহেতু ভাজ্জি নিজেই সরে এসেছেন, ধোনির কাছে যোগিন্দরের সঙ্গে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।’ মাহির এক ভক্ত এই বিষয়ে বলেছেন, ‘যোগিন্দর যদি সেই সময়ে ব্যর্থ হতেন তাহলে ধোনিকেও সমালোচনা সহ্য করতে হত.. তারপর তিনি এই অজুহাত দিলেন যে ভাজ্জি বলেনি বা যুবি বলেনি!!! পরামর্শ তো সব তাঁকেই নিতে হয়। ধোনির এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস ছিল এবং সে কারণেই তাকে এত সম্মান করা হয়!!’