পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে খুন করা হয় পুরুলিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে। পুরুলিয়ার আদ্রা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করে অজ্ঞাতপরিচয়ের শার্প শুটাররা। এবার এই খুনের ঘটনায় পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘সিট’ গঠন করা হল। এই সিট–এ আছেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল এবং রঘুনাথপুর এসডিপিও যোধাবর অবিনাশ ভীমরাও। খুনের চারদিনের মাথায় তৈরি হল সিট।
এদিকে এই খুনের ঘটনার দিনই জেলা পুলিশের তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন নিহত তৃণমূল কংগ্রেস নেতার পরিবারের সদস্যরা। শনিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ধনঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোন করে কথা বলেন। আর আজ, রবিবার ধনঞ্জয় চৌবের আড়রা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এই খুনের ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় অবস্থা। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছিল সেদিন রাতে। তিনটি গুলি লেগেছিল ধনঞ্জয়ের শরীরে। আর নিরাপত্তারক্ষীর লেগেছিল একটি গুলি। কে বা কারা গুলি চালিয়েছে তা জানতেই এবার তৈরি হল সিট।
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার কংগ্রেস প্রার্থী–সহ ২, বিক্ষোভে জ্বলছে আদ্রা
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই খুনের পিছনে রয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি বাইরে থেকে অস্ত্র মজুত করে এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই খুনের ঘটনায় মোট দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুরুলিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেসের এক প্রার্থী–সহ দু’জনকে। পুরুলিয়ার ডেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী আরশাদ হোসেনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আর মহম্মদ জামাল নামে আর এক ব্য়ক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। একটি মোটরবাইকে চড়ে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে এসে তিনজন তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতিকে লক্ষ্য় করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ধনঞ্জয় চৌবে। বাঁচাতে গিয়ে গুলি লাগে তাঁর দেহরক্ষীরও। তারপর দ্রুতগতিতে মোটরবাইকে চড়ে এলাকা ছাড়ে দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুন: নেতাই গণহত্যায় জড়িত অনুজ–ডালিমদের দায়িত্ব দিল সিপিএম, লালগড়ে জোর টক্কর
ঠিক কী বলছে পুলিশ? এই সিট গঠনের পর পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘গ্রেফতার হওয়া দু’জনকে জেরা করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’ এই তদন্তে নেমে নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। শার্প শুটারকে পথ চিনিয়ে এনেছিল মহম্মদ জামাল বলে পুলিশ মনে করছে। তাকে জেরা করে অবশ্য এমন তথ্য মেলেনি। কারণ এই কথা সে স্বীকার করেনি। শার্প শুটাররা কাজ করার পর মোটরবাইক কিছুদূরে ফেলে চম্পট দেয়। তারা ট্রেন ধরে গা–ঢাকা দিয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আর ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখান থেকে দেখা হচ্ছে কোনও ক্লু বেরিয়ে আসে কিনা।