গতকাল দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছে আদ্রা শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির। মৃতের নাম ধনঞ্জয় চৌবে। তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে থাকাকালীন তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। এমনকী ধনঞ্জয়বাবুর নিরাপত্তারক্ষীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক ধনঞ্জয়বাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর সারারাত পুরুলিয়া থমথমে ছিল। রেলশহর আদ্রায় তারপর থেকে কার্যত বনধের চেহারা নেয়। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। আর আজ, শুক্রবার সকাল থেকে অভিযুক্তর গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলছে বিক্ষোভ–অবরোধ। তবে এদিন মোট দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে পুরুলিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল কংগ্রেসের এক প্রার্থী–সহ দু’জনকে। বৃহস্পতিবার আদ্রায় পয়েন্ট ব্ল্য়াঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে। আজ, শুক্রবার সকালে পুরুলিয়ার ডেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী আরশাদ হোসেনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আর মহম্মদ জামাল নামে আর এক ব্য়ক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। আদ্রা বাজারে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ের বাইরে বসে কথা বলছিলেন দলের টাউন সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দেহরক্ষী শেখর দাস এবং গাড়ির চালক। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা খুনের ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে আদ্রা স্টেশন রোডে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল নেতা–কর্মীরা। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত ইতিমধ্যেই অনেকটা এগিয়েছে। কয়েকজন সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি হয়েছে। এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজও। জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আদ্রায় দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার মধ্যে একজন পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করেছে আদ্রা থানা। ধৃতদের নাম আর্শাদ হোসেন এবং মহম্মদ জামাল।’ আর্শাদ বেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী। গোটা ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।
আর কী তথ্য পাওয়া যাচ্ছে? একটি মোটরবাইকে চড়ে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে এসে দাঁড়ায় তিনজন। খুব কাছ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতিকে লক্ষ্য় করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে তারা। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ধনঞ্জয় চৌবে। বাঁচাতে গিয়ে গুলি লাগে তাঁর দেহরক্ষীরও। তারপর দ্রুতগতিতে মোটরবাইকে চড়ে এলাকা ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। মোট ৫টি গুলি লেগেছিল ধনঞ্জয় চৌবের বলে সূত্রের খবর। এই খুন পেশাদার শ্যুটারের কাজ বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। যে মোটরবাইকে করে খুন করতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা সেটা পাওয়া গিয়েছে। সেটায় করে কিছুদূর গিয়ে ফেলে চম্পট দেয় তারা। সুতরাং এই খুন পূর্ব পরিকল্পিত বলে মনে করা হচ্ছে।