পঞ্চায়েত নির্বাচনে নানা ব্যতিক্রম ঘটনা দেখা গিয়েছে। গ্রামের সবজি বিক্রেতা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন। আবার বিজেপির গড় বলে পরিচিত জেলায় দারণ ভাবে হেরেছে গেরুয়া শিবির। জেলা পরিষদে খাতা খুলতে পারেনি। আবার সিপিএম কোথাও কোথাও ভোটব্যাঙ্ক বাড়িয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে মোটামুটি এমনই ছবি দেখা গিয়েছে। কিন্তু সিপিএমের হয়ে মাঠে–ময়দানে যিনি চিৎকার করেন তাঁর নিজের বুথেই হেরেছে লালপার্টির কমরেডরা। সুতরাং আলিমুদ্দিনের অন্দরে এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কোন বুথে সিপিএম হেরেছে সেটা আবার টুইট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
এই টুইট করার কারণ ওই বুথ দুটিতে তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছে। আর সিপিএম হেরেছে ঘাসফুলের কাছে। বিজেপি তো তৃতীয় স্থানে। সুতরাং বিজেপির চাপ যেমন বেড়েছে তেমনই চাপ বেড়েছে সিপিএমেরও। কারণ এই বুথ দুটি সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রথমসারির নেতা সুজন চক্রবর্তীর। যিনি প্রত্যেকটি বিষয়েই তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে থাকেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সোচ্চার হন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সেখানে নিজের এলাকার বুথে এমন শোচনীয় পরাজয় কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষ্যে এবার প্যারোডি তৈরি করেছিল সিপিএম। যেখানে চোর–জোচ্চর কারও রেহাই নাই বলে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখেই ভোট দিয়েছেন। প্রত্যাখ্যান করেছেন সিপিএম এবং বিজেপিকে। কুণাল ঘোষের টুইট অনুযায়ী, সোনারপুরের অন্তর্গত কালিকাপুরের দুটি বুথ—১৫ ও ১৬ নম্বরে সিপিএম হেরেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। আর বিজেপি এই দুটি বুথে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে। তাই হয়তো দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গিয়েছে, ‘সিপিএম যে এখনও আছে তার প্রমাণ দিয়েছে তারা। তবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিই।’
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরে মারাত্মক ক্ষতি স্কুলগুলিতে, চুরির রিপোর্ট এল নবান্নে
ঠিক কী টুইট করেছেন কুণাল? এই হারের খতিয়ান তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সুজন চক্রবর্তীর নিজের বুথেও সিপিএমের হার এবং তৃণমূলের জয়।’ আর সোনারপুরের অন্তর্গত কালিকাপুরের ১৫ এবং ১৬ নম্বর বুথে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন যথাক্রমে কৃষ্ণা সর্দার এবং রবীন মণ্ডল। সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন যথাক্রমে নন্দরানি দাস এবং তরুণ কুমার ঘোষ। তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষ্ণা সর্দারের প্রাপ্ত ভোট ৪৫৩। আর সেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থী নন্দরানি দাস পেয়েছেন ৪১৭টি ভোট। অন্যদিকে ১৬ নম্বর বুথে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রবীন মণ্ডল পেয়েছেন ৪৩১টি ভোট। সেখানে সিপিএম প্রার্থী তরুণ কুমার ঘোষ পেয়েছেন ৪২১টি ভোট।