লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে এখন দেখা যাচ্ছে দল বদলের প্রবণতা। ঠিক সেই আবহে বর্ধমান পূর্বের তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে গেলেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। আর তারপরেই সুনীলের ফের দলবদল নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জন্মদিনে সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে হাজির হন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সেখানে তিনি কেক কাটার পাশাপাশি কয়েক ঘণ্টা কাটান। এই আবহে সুনীল মণ্ডল কি ফের ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মবনে ফিরে যেতে চলেছেন? তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
আরও পড়ুন: ‘কিছুই ছিঁড়তে পারবেন না’, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বেলাগাম মন্তব্য দিলীপের
প্রসঙ্গত, বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্র থেকে দুবার জয়ী হয়েছেন সুনীল মণ্ডল। গতবার জয়ের পরে দল ছেড়েছিলেন। ফের দলে ফেরেন। তবে এবার তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁর পরিবর্তে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্র থেকে চিকিৎসক শর্মিলা সরকারকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ফলে টিকিট না পাওয়ায় দলের প্রতি বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন সুনীল। সেই পরিস্থিতিতে এই কেন্দ্রে নির্বাচনের আগে বিদায়ী সাংসদের বাড়িতে হাজির হন দিলীপ। প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে থাকার পর গভীর রাতে উল্লাসের আবাসন ছাড়েন দিলীপ।
স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে হঠাৎ কেন সুনীলের সঙ্গে দিলীপ ঘোষ দেখা করলেন? এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, সুনীল তাঁর অনেক পুরনো বন্ধু। তাই দেখা করতে গিয়েছিলেন। চা খেয়েছেন, গল্প করেছেন, কেক কেটেছেন। দিলীপ আরও জানান, অনেকদিন আগেই তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সুনীল তাঁকে বর্ধমানের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করেছেন। তাই তৃণমূল সাংসদের বাড়িতে তিনি গিয়েছেন।
সুনীলের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা প্রসঙ্গে দিলীপের আরও সংযোজন, এর আগে তাঁকে অনুরোধ না করতেই তিনি চলে আসেন। এখন উনি কোথায় যাবেন সেটা উনি বলতে পারবেন। একইসঙ্গে দিলীপ জানান, তিনি কাউকে আসতে বলেন না। তবে কেউ এলে তাঁকে তিনি নিয়ে নেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বর্ধমান-পূর্ব কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটের জয়ী হয়েছিলেন সুনীল মণ্ডল। সেই সময় তিনি ২ লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। এরপর ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূলের টিকিটে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
তবে বিধানসভায় বিজেপির ভরাডুবির পর তিনি আবার পদ্ম শিবির থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। এরপর তৃণমূলের বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে থাকেন। অবশেষে নিজের উদ্যোগেই তিনি তৃণমূলে ফিরে আসেন। বার বার দল বদল করায় তাঁকে দলবদলু নেতা তকমা দেওয়া হয়। তবে এবার লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী না করায় তিনি কি ফের বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন? তাই নিয়ে এখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।