একশো দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে বারবারই তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে সৎ সাহস থাকলে এই দুটি বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছিলেন। কেন্দ্র যে টাকা দেয়নি সেই অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছিল, কেন্দ্র এই দুটি প্রকল্প খাতে বাংলায় হেরে যাওয়ার পর ১০ পয়সা দিয়েছে দেখাতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন তিনি। তবে লোকসভা নির্বাচনের মুখে ‘শ্বেতপত্র ডট ইন’ নামে একটি পোর্টাল প্রকাশ করল কেন্দ্র। যেখানে দেশের প্রত্যেকটি লোকসভা কেন্দ্রে কোন প্রকল্পে কত টাকা দেওয়া হয়েছে তার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে নেই আবাস যোজনা বা ১০০ দিনের কাজে কত টাকা দেওয়া হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান থেকেই এবার স্পষ্ট হয়ে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক দাবিই করছিলেন। আর তাই তাঁর সঙ্গে কোনও নেতা বিতর্কসভায় বসতে রাজি হচ্ছিলেন না। গোটা দেশের মধ্যে কোন রাজ্যের কোন লোকসভা এলাকায় নরেন্দ্র মোদী সরকার কোন প্রকল্পে কী কী কাজ করেছে সেটা অনলাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ‘শ্বেতপত্র ডট ইন’ পোর্টালে ধাপে ধাপে এগোলে বিজেপির দাবি করা তথ্যের ভিডিয়ো এবং পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। গত ১৪ মার্চ এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক লেখেন, ‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ করছি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। আমাকে ভুল প্রমাণ করার জন্য বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দু’জনের পুলিশ হেফাজত, নেপথ্য কাহিনী ফাঁস
এরপর সময় কেটে যায়। কোনও প্রত্যুত্তর মেলে না। এই আবহে গত ২৮ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘প্রায় দু’সপ্তাহ, ৩৫০ ঘণ্টা হয়ে গেল। কিন্তু বিজেপি এখনও আবাস এবং ১০০ দিনের কাজ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণে এগিয়ে এল না।’ একাধিক সভা–সমাবেশেও এই নিয়ে সুর সপ্তমে চড়ান অভিষেক। এরপর এক্স হ্যান্ডেলে একটি বিজ্ঞাপন পোস্ট করে বিজেপি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তর্কযুদ্ধে বসার জন্য সুবিধাজনক স্থান ও সময় জানানোর কথা বলা হয়। বিজেপি যুব মোর্চার কোনও এক কর্মী তর্কে যোগ দেবেন বলা হয়। তখন বিজেপির পোস্টটি রিপোস্ট করেন অভিষেক। আর ময়নাগুড়ির টাউন ক্লাবের মাঠে আসতে বলেন। তবে ময়নাগুড়ির সভায় এবং এখনও পর্যন্ত বিজেপির কোনও প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।
অবশেষে আজ ‘শ্বেতপত্র ডট ইন’ নামে পোর্টাল আত্মপ্রকাশ করল। অনলাইনে শ্বেতপত্র প্রকাশ করল বিজেপি। প্রত্যেকটি লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে সেখানে কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কী কাজ হয়েছে এবং কতজন সুবিধা পেয়েছেন তার হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। মোদীর শাসনকালে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে ৫৫,২৮১টি বাড়ি তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে অভিষেক ১০০ দিনের কাজ বাবদ রাজ্যের পাওনা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন সেটার উত্তর নেই এই পোর্টালে। আবাস যোজনা কিংবা একশো দিনের প্রকল্পে বরাদ্দের কথা উল্লেখ নেই বলেই নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁঝ বাড়াচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।