সামনে লোকসভা নির্বাচন। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৯ এপ্রিল। সেটি পাহাড়ে না হলেও হবে সমতলে। তাই বারবার প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রী ছুটে আসছেন। আর নানা কথা প্রচারে তুলে ধরছেন। কিন্তু পাহাড় সমস্যার সমাধানের কী হবে? বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে পাহাড় সমস্যার সমাধান, ১১ জনজাতির স্বীকৃতি–সহ গোর্খাদের নিয়ে ইস্তেহারে কোনও কথাই বলল না। আর তা নিয়ে পাহাড় জুড়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। বিজেপি কেন চুপ? প্রশ্ন বিরোধীদের।
এদিকে পাহাড়ে রাজু বিস্তার উপরই ভরসা রেখেছে বিজেপি। যদিও তাতে দলের অন্দরে ভাঙন দেখা গিয়েছে। বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা নির্দল হয়ে রাজুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। এই আবহে সোমবার শিলিগুড়িতে প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করলেন, ‘বিজেপি গোর্খাদের দাবি খতিয়ে দেখছে। কেউ সমাধান করতে পারলে সেটা নরেন্দ্র মোদীই করবেন। মোদীজির উত্তরবঙ্গে বিশেষ নজর আছে। দ্রুত ব্যবস্থা হবে।’ যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ করে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপার বক্তব্য, ‘বিজেপি কী কাজ করেছে সেটা ১৫ বছরে পরিষ্কার। কেন্দ্রের সব দল আশ্বাসই দিয়েছে। এবার নয়াদিল্লির কারও ইস্তেহারে কিছুই নেই।’
আরও পড়ুন: রামনবমী উপলক্ষ্যে সিসি ক্যামেরায় মুড়ছে ধর্মীয় স্থান, নির্দেশ জারি করল লালবাজার
অন্যদিকে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকেও একই আসনে দাঁড় করিয়েছেন অনীত থাপা। আসলে কংগ্রেসের ইস্তেহারেও পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথার উল্লেখ নেই। তবে কংগ্রেসের ইস্তেহারে ছোট কিছু আঞ্চলিক দাবিগুলিকে খতিয়ে দেখার কথা দু’লাইনে আছে। তবে দার্জিলিং বা গোর্খাদের কোনও উল্লেখ নেই। তবে কংগ্রেস প্রার্থী মুনীশ তামাংয়ের কথায়, ‘বিজেপি দার্জিলিং নিয়ে করতে কী চায় সেটা পরিষ্কার করে দিল। ওরা কখনও পাহাড়ের সমস্যা নিয়ে ভাবেনি। আগামী দিনেও ভাববে না। ভুললে চলবে না পার্বত্য পরিষদ, জিটিএ কংগ্রেসই দিয়েছে।’
পিছনের দিকে তাকালে, ২০০৯ সালে বিজেপি পাহাড়ের দাবি নিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে মূল বিজেপির ইস্তেহারে দার্জিলিংয়ের কোনও কথাই ছিল না। পরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার চাপে পাহাড়ের দাবিদাওয়া নিয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপর ২০১৯ সাল। পাহাড়ের রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেছিল বিজেপি। আর ১১ জনজাতির দাবি মেটানোর আশ্বাস দিয়েছিল। এখন ২০২৪ সাল। কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী গোপাল লামা বলেন, ‘বিজেপি ১৫ বছর ধরে একটাই কাজ করছে। সেটি হল, নির্বাচনে জিতে সাংসদ তৈরি।’