লোকসভা নির্বাচনে এবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রার্থী হয়েছেন। বিচারবিভাগ ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছেন তিনি। বিজেপির টিকিটে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু প্রাক্তন বিচারপতিদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য রাজনীতিতে আসা ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে তিনি কারও নাম নেননি। সোমবার এক সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে বলে অনেকে মনে করছেন। তাঁর নাম না করে ফিরহাদ বলেন, ‘যেসব বিচারপতিরা পদ ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেন, তাঁদের আগের রায়গুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।’ এই নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচন এখন দুয়ারে। তাই প্রচার–পর্ব সব দলেরই চলছে জোরকদমে। আর প্রত্যেকের মন্তব্যকে খুঁটিয়ে দেখছে রাজনৈতিক মহল। তাই সতর্ক থাকতে হচ্ছে নেতা থেকে প্রার্থীদের। সেখানে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘আমাদের বিচারবিভাগ হচ্ছে ঈশ্বরের মতো। সেখান থেকে কেউ রাজনীতিতে আসলে তাঁরা যে রায়গুলি দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। আমরা চাই একজন বিচারক বা বিচারপতি নিরপেক্ষ থাকুন। একজন বিচারপতি যিনি সমাজের জন্য চিন্তা করবেন। কোনও পক্ষ অবলম্বন না করে রায় দেবেন। সেটাই তো কাম্য।’ ইতিমধ্যেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়গুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সুতরাং এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: শান্তিকুঞ্জে পা রাখলেন মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী, ‘অবাক হওয়ার কিছু নেই’, খোঁচা কুণালের
এদিকে আগে বহু বিচারপতি অবসর নেওয়ার পর রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিষয়টি একটু ভিন্ন। কারণ তাঁর বিচারপতি থাকার মেয়াদ থাকলেও তিনি আগাম অবসর নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং কেন্দ্রীয় শাসকদলের প্রার্থী হন। সুতরাং বিচারপতির চেয়ারে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের যোগ হওয়া নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বিজেপি রাজ্যসভার সদস্য হন। তবে সেটা অবসর নেওয়ার পর। সুপ্রিম কোর্টের আর এক প্রাক্তন বিচারপতি এস আবদুল নাজিরকে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল করা হয়েছিল। ফিরহাদের কথায়, ‘এটা ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক প্রবণতা।’
অন্যদিকে বিচারপতিদের রাজনীতিতে আসার উচ্চকাঙ্খাকে সমর্থন করেননি ফিরহাদ হাকিম। এই বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা একজন প্রধান বিচারপতিকে দেখেছি। যিনি অবসর নিয়ে রাজ্যসভার সদস্য হয়ে যান। রামমন্দিরের সপক্ষে রায়দান করা আর এক মুসলিম বিচারপতিকে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল করা হয়েছে। এটা খুব বিপজ্জনক খেলা। বিচারপতিদের এত উচ্চাকাঙ্ক্ষার জায়গা থাকা উচিত নয়। ঈশ্বর কখনও একচোখো হন না। বিচারবিভাগকেও সেইভাবে কাজ করা উচিত।’