বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাকেই যেন সিলমোহর দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি আগেও কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছিলেন। এবার মোদী সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে সরব হলেন অমর্ত্য সেন। যা লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তাৎপর্যপূর্ণ। রামমন্দির, সিএএ নিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের ধর্মনিরপেক্ষ শিকড় এবং বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক প্রকৃতিকে ধ্বংস করবে। এটা দেশের ধর্মনিরপেক্ষ শিকড় এবং বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক প্রকৃতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’
সিএএ নিয়ে বারবারই নানা সভা–সমাবেশে মানুষকে সতর্ক করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় তা করতে দেবেন না বলেও সুর সপ্তমে তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অমর্ত্য সেনের সিএএ নিয়ে বক্তব্য, ‘ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। শুধুমাত্র হিন্দু পরিচয়ের উপর নজর করা বেশিরভাগ হিন্দুদের পক্ষে সহজ হতে পারে, তবে এটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ শিকড় এবং বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক প্রকৃতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ভারতীয় সংবিধান পরিবর্তন করা সরকারের শ্রেণি অগ্রাধিকার এবং তার একক ধর্মের ফোকাসের সঙ্গে এটিকে একসারিতে ফেলতে পারে। তবে এতে ভারতের সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হবে না।’
আরও পড়ুন: মহিলা ভোটব্যাঙ্ক ধরতে সিপিএমের ঘোষণাপত্রে মার্শাল আর্ট, ১৫ দফা প্রতিশ্রুতি মীনাক্ষীদের
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গোটা দেশে সিএএ কার্যকর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে বাংলার বিজেপি সাংসদরা মেতে উঠেছেন। যদিও মতুয়ারা নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবি তুলেছেন। তার উপর গরিব মানুষের কথা শোনে না বিজেপি সরকার বলে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এবার কেন্দ্রের মোদী সরকারের আর্থিক নীতি নিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘ভারতের শাসকদল শুধু ধনীদের কথাই শোনে। তাদেরই বেশি গুরুত্ব দেয়। অশিক্ষার অন্ধকারে নিমজ্জিত, ন্যূনতম চিকিৎসাটুকু পায় না যারা, লিঙ্গ বৈষম্যে যারা জর্জরিত সেইসব গরিবদের পাত্তা দেওয়া হয় না। তাদের কোনও উন্নয়ন হয় না।’
এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কড়া বার্তা দেন অমর্ত্য সেন। সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিগুলির সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘কংগ্রেসের অনেক সাংগঠনিক সমস্যা আছে। যার প্রতিকার প্রয়োজন। দলের মহান অতীত স্মরণ করে তাদের অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। আমি ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত। তবে দেশের গণতান্ত্রিক প্রকৃতিকে উন্নত করতে আমাদের অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’