আজ, বুধবার প্রকাশ করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের ইস্তেহার। আর সেখানে একের পর এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত তুলে ধরা হয়েছে ইস্তেহারে। এই সিদ্ধান্তগুলিকেই ‘দিদির শপথ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইস্তেহারে। এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে তুলে ধরা হয় দিদির শপথ। সেখানে ১০টি শপথের কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে দেশে ৪৫ লক্ষ মানুষ বেকার। এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের রিপোর্ট অনুযায়ী। তবে এখানে সব থেকে বড় দিদির শপথ হল বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস।
এদিকে দিদির শপথে রাখা হয়েছে—এক, বর্ধিত আয় শ্রমিকের সহায়। সেখানে সমস্ত শ্রমিকের আয় বাড়ানো হবে। দুই—দেশজুড়ে বাড়ি হবে সবারই। অর্থাৎ প্রত্যেকের মাথার উপর ছাদ তৈরি করে দেওয়া হবে। যা কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়েও তা করতে ব্যর্থ হয়েছে মোদীর সরকার। আবাস যোজনার টাকা না পাওয়া থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিন—জ্বালানির জ্বালা কমবে, দেশের জ্বালা মিটবে। অর্থাৎ বিনামূল্যে ১০টি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার দেওয়া হবে বিপিএল গ্রাহকদের। যেখানে উজ্জ্বলা গ্যাস দিতে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
অন্যদিকে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখানে তুলে ধরা হয়েছে। দিদির শপথে রয়েছে চার—অনেক হয়েছে শাসন এবার দুয়ারে রেশন। প্রত্যেক গ্রাহককে পাঁচ কেজি করে রেশন তার দুয়ারে পৌঁছে দেওয়া হবে। যাতে চাল, ডাল, শস্য থাকবে। আর খাবার নিয়ে চিন্তা থাকবে না। পাঁচ—আমাদের অঙ্গীকার নিরাপত্তা বাড়বে সবার। এই শপথে বলা হয়েছে কর্মসংস্থান নিশ্চিত থেকে শুরু করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে সুরক্ষা দেওয়া হবে। ছয়—বর্ধিত আয় নিশ্চিত এবার, ফুটবে হাসি অন্নদাতার। স্বামিনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হবে। তাও আইন মেনে। যা এখন দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের।
আরও পড়ুন: প্রথম দফার নির্বাচনে কোচবিহারে থাকবেন রাজ্যপাল, সিদ্ধান্ত নিলেন আনন্দ বোস
এছাড়া সাত—স্বল্প মূল্যে পেট্রোপণ্য, ভারতবর্ষে সকলে ধন্য। এখানে পেট্রল–ডিজেল কম দামে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এমনকী যাতে দামের ওঠা নামায় মানুষের অসুবিধা না হয় তার জন্য পৃথক তহবিল গঠন করা হবে। সেখান থেকে ভর্তুকি দেওয়া হবে। আট—নিশ্চিন্ত ভবিষ্যৎ অর্জন, যুবশক্তির গর্জন। এখানে কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ যাঁরা নেবেন তাঁদের বৃত্তি দেওয়া হবে। যাতে প্রশিক্ষণ নিতে অসুবিধা না হয়। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডও থাকবে এই শপথে। বৃত্তি–সহ প্রশিক্ষণ মিলবে। নয়—স্বচ্ছ আইন স্বাধীন ভারত। এখানে সিএএ, এনআরসি এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। আর সব শেষে দশ—এগিয়ে বাংলা এগোবে ভারত। এখানে মহিলাদের আর্থিক বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। আর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ১০ লক্ষ টাকার চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
এই গোটা বিষয়টি নিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোটের সরকার গঠনের পরই তৃণমূল কংগ্রেস এই সব প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে। কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোটের সরকার হলে এই বিষয়গুলি অগ্রাধিকারের সঙ্গে করা হবে।’ অমিত মিত্রের কথায়, ‘দেশের এখন বিপুল পরিমাণ টাকার দুর্নীতি চলছে। জিএসটির মাধ্যমেও দুর্নীতি চলছে। সমস্ত তথ্য সংসদে লিখিতভাবেই পেশ করা হয়েছিল।’ আর ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তব্য, ‘সব প্রশ্নের উত্তর আগামীকাল দেবো। আগে ইস্তেহার ভাল করে পড়ুন।’