কোচবিহারের দিনহাটার মঞ্চ থেকে সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় একেবারে লম্বা ফিরিস্তি দিয়েছিলেন যে তিনি ঠিক কী কী করেছেন উত্তরবঙ্গের জন্য়। এবার শনিবার জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের সমর্থনে প্রচারে এসে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্য়ায়কে বিঁধলেন মমতা। নাম না করে তিনি জানিয়ে দেন তাঁকে( শিখা চট্টোপাধ্যায়কে) তুলে এনেছিলেন নেত্রীই। প্রসঙ্গত বাম জমানায় তৃণমূলের দাপুটে নেত্রী ছিলেন শিখা। সেই সময় যে কয়েকজন বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করতেন তাঁদের মধ্যে শিখাদেবী ছিলেন অন্য়তম। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও তিনি এলাকায় দলকে নেতৃত্ব দিতেন। তবে পরে তিনি বিজেপিতে চলে যান।
তবে স্থানীয় এলাকায় কান পাতলে এখনও শোনা যায় শিখা চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে মমতার সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিল। জলপাইগুড়ি এলেই তিনি খোঁজ নিতেন শিখার। তবে সেসব আজ অতীত। আজ মমতার নিশানায় শিখা চট্টোপাধ্য়ায়।
শিলিগুড়ির জাবরাভিটায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়়ির তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবের প্রচারে এসে দেখেছিলাম মাঠ উপচানো ভিড়। কিন্তু পরে দেখলাম গৌতম দেব হেরে গেল। আর যাকে আপনারা জেতালেন তার সম্পর্কে বিজেপির মতো কুরুচিকর মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু জেনে রাখবেন তাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে গ্রাম পঞ্চায়েত বা সমিতির মেম্বার আমিই বানিয়েছি। আর তার কত ফুটানি। ডাবগ্রামের কথা তার মনে থাকে না! কী করেছে জিজ্ঞাসা করুন তাকে।
সেই সঙ্গেই নেত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গের সিংহভাগ আসন তো বিজেপির। কিন্তু বিজেপি উত্তরবঙ্গের জন্য় কোনও কাজ করেনি। আমরা বেঙ্গল সাফারি পার্ক তৈরি করেছি। বাগডোগরা বিমানবন্দরে নাইট ল্যান্ডিংয়ের জন্য জমি দিয়েছি। বিনা পয়সায় রেশন দিচ্ছি। বিজেপি ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে। আবাসের টাকা আটকে রেখেছে।
আর মমতার কথা শুনে শিখাদেবী সংবাদমাধ্য়মে বলেন, কেউ তো কাউকে তুলেই নিয়ে আসেন। ওঁকেও সুব্রত মুখোপাধ্যায় তুলে এনেছিলেন। সেটাও উনি মনে রাখুন। আসলে প্রত্যেককেই কেউ না কেউ তুলে নিয়ে আসেন। এরপরই তিনি সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন, আমি নালিশ করেছি মুখ্য়মন্ত্রীর নামে। যখন আমি তৃণমূল ছেড়েছিলাম তখন জমি দুর্নীতি নিয়ে অন্তত ৫টা চিঠি দিয়েছিলাম মুখ্যমন্ত্রীকে। যার একটির উত্তরও আমি পাইনি। এখন বলছেন তুলে এনে প্রার্থী করেছিলাম। আমার কাজ দেখে করেছিলেন। এখন আক্ষেপ করছেন গৌতম দেব জিততে পারেননি।
বাস্তবিকই এলাকায় বরাবরই লড়াকু নেত্রী বলে জনপ্রিয় শিখাদেবী। একসময়ে ছিলেন মমতার গুডবুকে। আর সেই তিনিই এখন চক্ষুশূল।