প্রয়াত জৈন সম্প্রদায়ের শেষ মহাবীর আচার্য বিদ্যাসাগর মহারাজ। সাল্লেখানা অনুসরণ করে সমাধি গ্রহণ করেন জৈন সন্ন্যাসী আচার্য বিদ্যাসাগর মহারাজ। গত ১৮ ফেব্রুয়ারী, ৭৭ বছর বয়সে ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁও জেলার চন্দ্রগিরি তীর্থে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ-এর পুরনো ছবি দিয়ে জৈন সন্ন্যাসী আচার্য বিদ্যাসাগর মহারাজকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভিকি জৈন এবং তার স্ত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডে।
প্রসঙ্গত, 'সাল্লেখানা' হল একটি জৈন ধর্মীয় রীতি। যার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক শুদ্ধির জন্য স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণের জন্য উপবাসের পথ বেছে নেন জৈন সন্ন্যাসীরা। তীর্থের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আচার্য বিদ্যাসাগর মহারাজ সকাল ২.৩৫ মিনিটে চন্দ্রগিরি তীর্থে 'সাল্লেখানা' মাধ্যমে সমাধি লাভ করেন। তিনি খাবার ও জল দুটোই পরিত্যাগ করেছিলেন। মৌনব্রত পালন করছিলেন তিনি। আর এভাবেই সমাধি লাভ করেন আচার্য।
ভিকি জৈন ও তাঁর স্ত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডে যৌথ বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘হে শ্রদ্ধেয় আচার্য! আমাদের প্রতি আপনার করুণা বর্ষণ করুন। যেহেতু আপনার অনুগ্রহ আমার উপর রয়েছে, আমি এই জীবনে তাই ঋণী। এই ঋণ আমি এই জীবনে কীভাবে শোধ করব? আপনার এই অবিরাম প্রবাহিত করুণার গঙ্গার এক ফোঁটাও ফেরত দিতে পারব না, আমরা আপনার দয়া কথায় প্রকাশ করতে পারি না। আন্তরিক সমবেদনা রইল।’ ভিকি ও অঙ্কিতার পোস্ট থেকেই স্পষ্ট তাঁরা আচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-টানা ১৭ দিন হাসপাতালে কাটানোর পর বাড়ি ফিরলেন সৌরভের মা, এখন কেমন আছেন?
জানা যাচ্ছ, 'মহারাজ গত ৬ মাস ধরে ডোঙ্গারগড়ে তীর্থে অবস্থান করছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত তিনদিন ধরে তিনি 'সাল্লেখানা' পালন করছিলেন, স্বেচ্ছায় আমৃত্যু উপবাস করার এটা একটা ধর্মীয় রীতি। যে রীতি পালনের সময় খাবার ও জল পরিত্যাগ করেন জৈন সন্ন্যাসীরা। জৈন ধর্মে রীতি অনুসারে আত্মার শুদ্ধির জন্য নেওয়া হয় এই ব্রত'।
জানা যায়, রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ প্রয়াত আচার্য বিদ্যাসাগর মহারাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং চন্দ্রগিরি তীর্থে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
কে এই আচার্য বিদ্যাসাগর মহারাজ?
১৯৪৬ সালে ১০ অক্টোবর কর্ণাটকের সদালগা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পরে তিনি রাজস্থানে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের ২২ নভেম্বর মুনি থেকে আচার্য হন বিদ্যাসাগর। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর। সংস্কৃত, প্রাকৃতের পাশাপাশি হিন্দি, মারাঠি, কন্নড় ভাষাতেও পারদর্শী ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষার কবি হিসাবেও প্রসিদ্ধ ছিলেন। গত ১৪ নভম্বর তিনি আচার্যত্ব ত্যাগ করে সাল্লেখানা গ্রহণ করেন।