বাড়ির সামনে মাঠে খেলতে খেলতে প্রস্রাব পেয়েছিল, সাত-পাঁচ না ভেবে প্রতিবেশির ফ্ল্যাটের নালার পাশে প্রস্রাব করে ৮ বছরের হিমায়ন বসু। তারপর যা ঘটল তাতে স্তম্ভিত অনেকেই! অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর নাম সবারই জানা, হিমায়ন বিশ্বনাথের ছোট ছেলে।
রবিবার বিকালে দাদা বিশ্বায়ন বসু (১৩)-র সঙ্গে বাড়ির সামনের মাঠে খেলতে গিয়েছিল সে। বাবা-মা দুজনেই তখন বাড়ির বাইরে। নিজের শো-এর কাজে ব্যস্ত ছিলেন বিশ্বনাথ। ফ্ল্যাটের নালার সামনে হিমায়নক প্রস্রাব করতে দেখে চড়াও ওই অভিনেতার প্রতিবেশী। বলা নেই, কওয়া নেই সোজা হিমায়নের হাত মুচড়ে দেন তিনি। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠ সে। ছুটে আসে দাদা। পরের ঘটনা আরও মারাত্মক। অভিনেতার স্ত্রী দেবিকা বসু জানান, ‘ভদ্রলোক আচমকা এসে ওর হাতটা মুচড়ে দিয়ে বলেন, ‘এই প্রস্রাব জিভ দিয়ে চেটে পরিষ্কার করে দে’। তখন ছোট ছেলে কেঁদে উঠলে আমার বড় ছেলে এগিয়ে গিয়ে বলে, ‘কাকু ওকে ছেড়ে দাও, ওর লাগছে’। সেই সময় আমার ছোট ছেলে বলে, ‘আমি জল দিয়ে ধুয়ে দেব, আমায় ছেড়ে দাও’। তখন ওই ভদ্রলোক আমার বড় ছেলেকে বলেন, ‘তা হলে তুই চেটে পরিষ্কার করে দিয়ে যা’।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে বিশ্বনাস বসু জানান, ‘আমি ওই ব্য়ক্তিকে চিনি না। শুনলাম পাড়ায় উনি নতুন এসেছেন। আমার ছেলেরা ক্ষমা চেয়েছিল, পরিষ্কার করে দেবেও বলেছিল। উনি হাতটা মুচকে দেওয়ায় ছেলে ঘাবড়ে যায়। ওকে নিয়ে কাল রাতে হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল। হাতটা ডিসলোকেট না হলেও ডিসঅর্ডার হয়ে গেছে। ছোট তো, মানসিকভাবে খুব আঘাত পেয়েছে, ট্রমাটাইজড। ভুলতে সময় লাগবে’।
এই ঘটনার পর পাড়ার লোকেরা এগিয়ে আসে দুই খুদের সাহায্যে, জানান অভিনেতার স্ত্রী। খবর দেন দেবিকাকে। ছুটে আসেন তিনি। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশও। কিন্তু সেই ব্যক্তি ভাবলেশহীন! ছেলে যন্ত্রণায় কাতর, হাতের হাড়ের অবস্থান বিগড়ে যাওয়ায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। সেই নিয়ে আজ হিমায়ন পৌঁছেছিল স্কুলের পরীক্ষা দিতে। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র বিশ্বানাথের শিশুপুত্র। আজ ফাইনাল পরীক্ষা তাঁর। স্কুল সহমর্মী হয়ে লেখার জন্য অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় বরাদ্দ করে হিমায়নের জন্য।
বিশ্বনাথ জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় গড়ফা থানায় এফআইআর করেছেন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তবে সমাজমাধ্যমে এ সব নিয়ে জলঘোলা করতে চান না বিশ্বনাথ। হিমায়নের আচরণের প্রতি কি আরেকটু সংবেদনশীল আচরণ করত পারতেন না ওই প্রতিবেশী? প্রশ্ন রয়ে গেল।