বোধন হয়ে গিয়েছেন, মহাষষ্ঠী পার করে আজ মহাসপ্তমী। চারপাশে পুজোর আবহ। আর দুর্গাপুজো মানেই একদিকে বায়োয়ারী পুজো, অপরদিকে বনেদি বাড়ির পুজো, দুই পুজো ঘিরেই আগ্রহ থাকে। আর তেমনই এক বনেদী বাড়ির দুর্গাপুজো হল 'এই পথ যদি না শেষ হয়', ‘সন্ধ্যাতারা’ খ্যত অভিনেত্রী অন্বেষা হাজরার বাড়ির পুজো। যে পুজোর ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। এক সাক্ষাৎকারে নিজের বাড়ির পুজোর ইতিহাস নিয়ে নানান কথা জানিয়েছিলেন অন্বেষা।
কেমন সেই ইতিহাস?
অন্বেষা জানিয়েছিলেন, দুর্গাপুজো হয় তাঁদের ধানখেউরের (বর্ধমান) গ্রামের বাড়িতে। যে বাড়িটা প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন। আর এই প্রাচীন পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গল্প নিয়েও কথা বলেছিলেন অন্বেষা। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমার দাদুর বড়পিসিমার বয়স যখন মাত্র ৫ বছর। তখন উনি একদিন ঘুম থেকে উঠে ঠাকুর কোথায় বসবে, পুজোর জোগাড়ে কী কী লাগে সব বলে দিয়েছিলেন। যা অত ছোট্ট শিশুর পক্ষে বলা সম্ভব নয়। উনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। আর তখন থেকেই আমাদের ধানখেউরের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়। ’
আরও পড়ুন-অঞ্জলি দেওয়ার আগে দুর্গাপুজো মণ্ডপ থেকে পড়ে গেলেন কাজল, অল্পের জন্য…
ছোটপর্দার উর্মি বলেন, তাঁদের বাড়িতে অবশ্য শাক্ত মতে নয়, বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। নবমীর দিন বলিরও নাকি রীতি আছে, তবে পশু নয়, ফল বলি দেওয়া হয়। পুজোর ৪ দিন অন্বেষাদের ধানখেউরের সেই প্রাচীন বাড়িতে হয় ৪ বেলা ঢালাও খাওয়া-দাওয়া। অষ্টমীর দিন নিরামিষ হলেও সপ্তমী ও নবমী হয় মাছ। মাংসের প্রবেশ নিষেধ। তবে তাঁদের পুজোয় অন্ন নয়, লুচি ভোগ হয়। অন্বেষার কথায়, তিনি তাঁর বাবার মুখে শুনেছেন, একসময় নাকি দুর্গাপুজোতে তাঁদের বাড়িতে লোকের বন্যা বয়ে যেত। লরি করে মাছ আসত। যেটা নাকি অভিনেত্রীর বাবারা ছোটবেলায় দেখেছেন।
অন্বেষা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, পুজোতে ভোগ হিসাবে ক্ষীর, ছানা, লুচি তাঁর ভীষণ প্রিয়। ছোটপর্দার উর্মির কথায়, তাঁর কাছে দুর্গাপুজো মানে ৫ ভাইবোনের একত্রিত হওয়া। পুজোতে তাঁর প্রয়াত দাদুর কথা খুব মনে পড়ে, যিনি নানান গল্প শোনাতেন। বর্তমানে তাঁর বাবা ও জ্যেঠুর উদ্যোগেই ধানখেউরের বাড়িতে পুজো হয় বলেও জানিয়েছিলেন অন্বেষা।
অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে দুর্গাদালানের থেকেও নাকি প্রাচীন বাড়ির গোপাল মন্দির। তাঁদের ধানখেউরের বাড়ি তৈরির আগেই নাকি সেখানে গোপাল মন্দির ছিল। পরে ওই মন্দির ঘিরেই বাড়িটা তৈরি হয়।