হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম পছন্দের অভিনেত্রী ফারিদা জালাল। নিজের অভিনয় গুণে দশকের পর দশক ধরে সিনেপ্রেমীদের মনে পাকা জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লেযাঙ্গে’ ছবিতে কাজলের মায়ের চরিত্রে মন ছুঁয়েছেন তিনি, আবার কুছ কুছ হোতা হ্য়ায়-তে শাহরুখের মা হিসাবেও অনবদ্য। সম্প্রতি নিজের ফিল্মোগ্রাফিতে চোখ রেখে এক অজানা তথ্য ফাঁস করলেন বর্ষীয়ান তারকা।
করণ জোহর প্রযোজিত ‘কাল হো না হো…’ ছবিতে প্রীতি জিন্টার ঠাকুমা অর্থাৎ জয়া বচ্চনের শাশুড়ি মায়ের চরিত্রের অফার গিয়েছিল ফরিদা জালালের কাছে। কিন্তু সেই ভূমিকায় অভিনয় করতে রাজি হননি তিনি। কেন জানেন? রাজশ্রী আনপ্লাগড-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৭৪ বছর বয়সী অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার কাল হো না হো ছবিতেও কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রায় একই সময়ে আমি কভি খুশি কভি গম ছবিতেও জয়া বচ্চনের সমবয়সীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। এমনকি ওঁনার সন্তানদের আমিই বড় করেছিলাম। কাল হো না হো-তে তাই ওঁনার শাশুড়ি হিসাবে লোকজনের আমাকে গ্রহণ করতে অসুবিধা হবে বলে আমার মনে হয়েছিল’।
প্রসঙ্গত, বাস্তবে জয়া বচ্চনের (৭৫) চেয়ে এক বছরের ছোট ফরিদা জালাল (৭৪)। শেষ পর্যন্ত ওই চরিত্রটি যায় সুস্মমা শেঠের ঝুলিতে। অত্য়ন্ত দক্ষতার সঙ্গে জয়ার শাশুড়ির চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। ছেলের আত্মহত্যার জন্য বউমা জয়ার উপরই দায় চাপিয়েছিলেন তিনি। আমন (শাহরুখ)-এর প্রচেষ্টায় ভুল বোঝাবুঝি ভুলে মিল হয়েছিল শাশুড়ি-বউমার।
একই সাক্ষাৎকারে ফরিদা জালাল তাঁর পর্দার ছেলে শাহরুখের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অভিনেত্রী জানান, ‘ডুপ্লিকেট’ ছবির শ্যুটিংয়ের ফাঁকে ঘটা এক ঘটনা। ছবির শ্যুটিংয়ে মা-কে নিয়ে মরিশাসে হাজির হয়েছিলেন ফরিদা। এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলের উদ্দেশে তাঁদের সমস্ত জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন শাহরুখ খান। তাঁর কথায়, ‘কে বিশ্বাস করবে বলুন তো! শাহরুখ এসে ঠেলতে ঠেলতে আমাদের সব ব্যাগপত্তর নিয়ে গিয়েছিল… শাহরুখ একজন পারফেক্ট জেন্টালম্যান। মহিলাদের কীভাবে সম্মান দিতে হয় তা খুব ভালোভাবে জানে ও’।
ফরিদা জালাল হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় মা তথা ঠাকুমা। ফিল্মফেয়ার-সহ বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাশোশিয়েশনের তরফে স্বীকৃতি পেয়েছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি হিন্দি সিরিয়ালেও তাঁর অবদান ভোলবার নয়। ‘ইয়ে জো হ্যায় জিন্দেগি’, ‘দেখ ভাই দেখ’, ‘জিনি অউর জুজু’-র মতো টেলিভিশনে সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে ‘শরারত’ সিরিয়ালে পরীর চরিত্রে অভিনয় করে আট থেকে আশির মন জয়ে সফল হয়েছিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে বেড়ে ওঠা খুদেদের কাছে এই সিরিয়াল আজও মনে গেঁথে রয়েছে।