সম্প্রতি, অক্ষয়-টাইগারের ‘বড়ে মিয়াঁ ছোটে মিয়াঁ’র দৌলতে ফের একবার আলোচনায় উঠে এসেছে পুরনো ‘বড়ে মিয়াঁ ছোটে মিয়াঁ’। যেটি কিনা ১৯৯৮ সালে গোবিন্দার হিট ছবিগুলি মধ্যে ছিল অন্যতম। ৯০-এর দশকের অন্যতম চর্চিত নাম ছিলেন গোবিন্দা। একটা সময় একের পর এক হিট ছবি দিয়েছেন বলিউডের এই সুপারস্টার। তাঁর হিট ছবি গুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘হিরো নম্বর ওয়ান’। ঘটনাচক্রে এই তিনটি ছবিরই প্রযোজক ছিলেন বাসু ভগনানি। সম্প্রতি, গোবিন্দাকে নিয়ে মুখ খুলেছেন সেই প্রযোজক বাসু।
ঠিক কী বলেছেন প্রযোজক বাসু ভগনানি?
বসুর অভিযোগ, সুইৎজারল্যান্ডে ‘হিরো নম্বর ওয়ান’ (১৯৯৭)এর শ্যুটিংয়ের সময় শ্য়ুটিং সেট থেকে তিনদিনের জন্য উধাও হয়ে গিয়েছিলেন গোবিন্দা। শেষপর্যন্ত তিনি ফিরেছিলেন ঠিকই তখন ১ দিনের মধ্যেই ছবির বেশিরভাগ কাজ শেষ করে ফেলেছিলেন। এদিকে বাসু ভগনানির মন্তব্যের জবাবও দিয়েছেন গোবিন্দার ম্যানেজার শশী সিনহা।
কী উত্তর দিয়েছেন গোবিন্দার ম্যানেজার?
বাসুর মন্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে শশী বলেন, ‘এমন কোনও ঘটনার কথা আমার মনে পড়ছে না। আর এখন ওসব বলার কোনও মানে হয় না। সেসময় গোবিন্দার ছবির শুটিংয়ের মধ্যস্থতার দায়িত্ব আমারই ছিল। শ্যুটিংয়ে দিনের বেলায় ২-৩ ঘণ্টা দেরি হলেও সেটা নিশ্চয়ই শারীরিক কারণে বা বিমানযাত্রায় বিলম্বের কারণেই ঘটে থাকবে। এমনকি বাসু ভগনানিজিও খুব ভালো করেই জানেন যে গোবিন্দাজি দেরি করলেও তিনি সময়মতো নিজের কাজ শেষ করেছিলেন।’
শশী আরও বলেন, ‘আমরা সবাই বাসু স্যারকে অনেক সম্মান করি। শুরুর দিনগুলোতে আমরা তার সঙ্গে অনেক কাজ করেছি। আমি এত বছর ধরে অভিনেতা এবং প্রযোজকের মধ্যে একটা মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তি ছিলাম। এত বছর পর ওঁর এখন এসব কথা বলার কোনও মানে হয় না। ওঁর যদি কোনো সমস্যা থাকে, আমরা ওঁর সঙ্গে বসে তা নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
গোবিন্দাকে নিয়ে ঠিক কী বক্তব্য বাসুর?
সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার বসু বলেছিলেন, ‘লোকেরা গোবিন্দা সম্পর্কে যা কিছু বলতে পারে, তবে ওঁর সঙ্গে আমার দুর্দান্ত ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। উনি আমার সঙ্গে খুব সুন্দর ভাবেই কাজ করেছেন। কখনো ২ ঘণ্টা দেরি করে কাজে এলেও বা ১ ঘণ্টা আগেই সব কাজ শেষ করে ফেলতেন।’
সেই কথা প্রসঙ্গেই বাসু ভগনানি ডেভিড ধাওয়ান পরিচালিত ‘হিরো নম্বর ওয়ানের’ শ্যুটিংয়ের পুরনো একটা ঘটনার কথাও স্মরণ করেন। বাসু বলেন, গোবিন্দা সুইৎজারল্যান্ডে না পৌঁছনোর কারণে ৭৫ জনের গোটা ইউনিট তিনদিন ধরে সুইজারল্যান্ডে আটকে ছিল। তিনদিন অপেক্ষা করার পর বাসু গোবিন্দকে ফোন করেন।
পুরনো কথা মনে করে বাসু বলেন, ‘আমি গোবিন্দাকে ডেকে বলেছিলাম, আপনি যদি না আসেন তাহলে আমরা দেশে ফিরে আসব। গোবিন্দা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললেন, তিনি আসছেন। ভোর ৬টায় সুইৎজারল্যান্ডে পৌঁছলেন। আমিই ওঁকে বিমানবন্দরে নিতে গিয়েছিলাম। তিনি ভ্যানে বসেছিলেন। আমরা ১০-১৫ মিনিটের জন্য একে অপরের সঙ্গে কথা বলিনি। তারপর বললেন, তিনি শেভ (দাড়ি কামানো) করতে চান। তখন আমি ভাবলাম সকাল ৬ টায় শেভ করার জায়গা কোথায় পাব। তখন আমি গোবিন্দাকে একটা পেট্রোল পাম্পে নিয়ে গেলাম। সেখানে ১ ইউরো বা কিছু কমবেশি খরচে একটা বেসিক রেজার পেয়েছিলাম। সেখানকার বাথরুমে গিয়ে গোবিন্দা তাড়াতাড়ি শেভ করে ফেললেন।’
বাসু বলেন, ‘গোবিন্দা সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম শট দেন। সেটা ছিল ছবির এক নম্বর গান। একদিনেই ৭০ শতাংশ গানের শ্যুট শেষ করে ফেলেন তিনি। তিন দিন না থাকলেও একদিনেই ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করে নেন। এটাই প্রশংসার যোগ্য।’
প্রসঙ্গত, এর আগে এক সাক্ষাৎকার রবিনা ট্যান্ডনও বলেন, গোবিন্দা শ্যুটিংয়ে এতটাই দেরিতে আসতেন, যে তাঁর একদফা ঘুম হয়ে যেত। তবে দেরিতে এলেও সময়েই কাজ শেষ করে ফেলতেন গোবিন্দা।