কপালে লাল তিলক, কাঁচা-পাকা মাথার চুল ও দাড়ি, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, পরনে লাল রঙের বসন, কিছুদিন আগেই ‘ভবানী পাঠক’ হয়ে প্রকাশ্যে এসেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। খুব শীঘ্রই তিনি ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবিতে এভাবেই ধরা দেবেন। এক ঝটকা দেখলে তাঁর এই লুক দেখলে হয়তবা তাঁরই বেশ পুরনো একটা ছবি 'মনের মানুষ'-এর কথা মনে পড়ে যাবে। গৌতম ঘোষ পরিচালিত যে ছবিটি জাতীয় পুরস্কারও জিতে নিয়েছিল।
তবে 'মনের মানুষ'-এর সেই ‘লালন’ প্রসেনজিতের সঙ্গে 'ভবানী পাঠক' প্রসেনজিতের অনেক পার্থক্য। 'লালন' সেজেছিলেন গেরুয়া বসনে, আর ভবানী পাঠক পরেছেন লাল বসন। আর 'লালন' এক্কেবারেই মারপিঠ করতেন না, তাঁর গলায় ছিল গান। আর ভবানী পাঠক প্রসেনজিৎ মারপিট করবেন পুরোদমে। তাঁরই হাত ধরে তৈরি হবে ‘দেবী চৌধুরানী’।
তবে শুধু 'ভবানী পাঠক' হয়ে নয়, এর আগেও বহুবার পর্দায় মারপিট করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বহু বাণিজ্যিক বাংলা ছবি অ্যাকশন দৃশ্যে দেখা গিয়েছে বুম্বাদাকে। তবে এখনকার বাংলা ছবিতে সেভাবে আর অ্যাকশন দৃশ্য থাকে না। সম্প্রতি সেবিষয়েই মুখ খুলেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-আমার উরফিকে বড়ই ভালো লাগে, LSD-2 বানানোর আগে আমি ওঁর ভিডিয়ো দেখতাম: দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়
TV9-কে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমি খুশি যে নতুন প্রজন্মের দেব-অঙ্কুশদের মতো অভিনেতা, প্রযোজকরা আবারও ছবিতে মারপিট, অ্যাকশন দৃশ্য ফিরিয়ে আনছে। দেবী চৌধুরানীতেও প্রচুর অ্যাকশন দৃশ্য রয়েছে।’ কিছুটা অতীত স্মৃতিতে ফিরে গিয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, 'আমি আমার অমরসঙ্গী-র ফাইটমাস্টার মাদলানির কথা যখন বলি, তখন সেই কিংবদন্তির নাম শুনে চমৎকৃত হন দেবী চৌধুরানীর ফাইটমাস্টার।'
দেবী চৌধুরানী ছবির শ্যুটিং প্রসঙ্গে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘এই গরমে দেবী চৌধুরানীর শ্যুটিং করেছি। ভয়ঙ্কর কস্টিউম। শ্যুটিংয়ের মাঝে বিরতির সময়ও সেই পোশাক ছেড়ে রাখা সম্ভব ছিল না। ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় তখন ভগবানকে ডাকা ছাড়া উপায় ছিল না আমার। প্রচুর জল আর ORS খেয়ে টিকে ছিলাম।’ প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ার বেশকিছু লোকেশনে দেবী চৌধুরানীর শ্যুটিং হয়েছে।
ফাইট সিকোয়েন্সের কথা বলতে গিয়ে প্রসেনজিৎ ফিরে যান তাঁর বাবার কথায়, বলেন, ‘এক্ষেত্রে একজনের নাম আমি নেবই। তিনি আমার বাবা, বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। রক্ততীলক ছবিতে আমিই আমার বাবার ছোটবেলাটা করেছিলান। সেই ছবিতে বাবার কিছু অ্যাকশন সিকোয়েন্স ছিল। আসলে তখন মুম্বইয়ের ফাইট সিকোয়েন্সের একটা আলাদা ঘরনা ছিল। ছবিতে ছিলেন উত্তমকুমার, সুপ্রিয়া দেবীও ছিলেন। ডাকাত-পুলিশের কিছু মারামারির দৃশ্য ছিল ছবিটায়।’
পুরনো কথায় ফিরে প্রসেনজিৎ বলেন, তাঁর ‘প্রতিবাদ’ ছবির ফাইট সিকোয়েন্স প্রশংসিত হয়েছিল। তাঁর নিজের পরিচালনায় ‘পুরুষোত্তম’ ছবির অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য তাঁর টিম হায়দরাবাদে গিয়েছিল। জানান, সেই সেগুলি এখন তিনি ডিজিটালি প্রকাশ করতে চান। তাঁর আশা নতুন প্রজন্মের এগুলো ভালো লাগবে।