বাংলা সাহিত্য জগতে নক্ষত্রপতন। এক বিরাট শূন্যস্থান তৈরি করে অনন্তলোকে পাড়ি দিলেন সমরেশ মজুমদার (Samaresh Majumder)। তাঁর মৃত্য কিছুতেই মানতে পারছেন না সাহিত্য জগতের অন্যান্য তারকারা। এমন দিনে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Sirshendu Mukherjee) থেকে শংকর (Shankar), সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের (Sanjib Chatterjee) বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে তাঁর সঙ্গে কাটানো সোনালি দিনের কথা।
সাহিত্যিক শংকর যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না সমরেশ মজুমদারের চলে যাওয়াটা। তিনি আনন্দবাজারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমি ওকে অনেক আগে থেকে চিনতাম। ও লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকেই ওকে চিনি। আমার ভাইয়ের সহপাঠী ছিল সমরেশ। দুজনে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়ত একসঙ্গে। আমাদের ভীষণ ভালো যোগাযোগ ছিল। নানা অনুষ্ঠানে বহুবার দেখা হয়েছে আমাদের। ওর চলে যাওয়া আমার কাছে ব্যক্তিগত শোক। ওর মতো ছেলে খুব কম দেখেছি।'
সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে গভীর ভাবে শোকাহত সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। তিনিও যেন কিছুতেই কাছের বন্ধুর এই মৃত্যু মানতে পারছেন না। এই বিষয়ে লেখক বলেন, 'আমার কাছে এই খবর একটা বজ্রাঘাতের সমান। ও আমায় সঞ্জু বলে ডাকত। আমি যবে থেকে লেখালিখির জগতের সঙ্গে যুক্ত হই তবে থেকেই ওর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। ভীষণই ভালো সম্পর্ক ছিল আমাদের। ভাবতেই পারছি না ওর মতো একজন মানুষ কী করে এত তাড়াতাড়ি চলে গেল।'
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ও তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনিও শংকরের কথা মতো জানান, 'ও লেখক হয়ে ওঠার আগে থেকে ওকে চিনতাম। ওর চলে যাওয়ায় এখন আর কে রইল বাংলা সাহিত্য জগতে?' শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় যখন কলকাতা বোর্ডিং হাউজে থাকতেন তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন সমরেশ মজুমদার। প্রয়াত লেখককে এই বর্ষীয়ান সাহিত্যিক বাবলু নামে ডাকতেন।
৮ মে বিকেল ৫টা ৪৫ নাগাদ অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। দীর্ঘদিন লড়াই করছিলেন রোগের সঙ্গে। এই পাহাড় প্রেমী মানুষটার পাহাড়েই জন্ম হয়েছিল ১৯৪৪ সালের ১০ মার্চ। তাঁর ঝুলিতে আছে আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, ইত্যাদি। তাঁর তৈরি অন্যান্য বইয়ের মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য তেরো পার্বণ, সাতকাহন, ইত্যাদি। তিনি তৈরি করেছিলেন অর্জুনের মতো গোয়েন্দা চরিত্রকে।